ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে মস্কোর সমর্থনে তিন হাজার সৈন্যকে রাশিয়ায় পাঠিয়ে দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা দেশটির আইনপ্রণেতাদের এই বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। রাশিয়ায় পাঠানো উত্তর কোরিয়ার এই সৈন্য সংখ্যা আগের করা ধারণার চেয়েও দ্বিগুণ বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতারা।
সিউলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতারা বলেছেন, পিয়ংইয়ং মোট ১০ হাজার সৈন্যকে রাশিয়ায় পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই সৈন্যদের ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে লড়াইয়ের জন্য আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মোতায়েন করা শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে, শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস জানায়, উত্তর কোরিয়া সামরিক বাহিনীর জাহাজে করে রাশিয়ায় বিশেষ বাহিনীর প্রায় এক হাজার ৫০০ সৈন্য পাঠিয়েছে। এর পরপরই দেশটিতে ৩ হাজার সৈন্য পাঠানোর তথ্য জানিয়েছে সিউল।দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদীয় গোয়েন্দা কমিটির সদস্য পার্ক সান-ওন বলেছেন, ‘‘সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরে উত্তর কোরিয়ায় সৈন্যদের প্রশিক্ষণের আলামত শনাক্ত করা হয়েছিল।
‘‘এতে প্রতীয়মান হয় যে, সৈন্যরা এখন রাশিয়ার একাধিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ছড়িয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে।’’
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে রাশিয়ায় ১০ হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রস্তুতির অভিযোগ তুলেছেন। রাশিয়ার যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার জড়িত থাকার এই প্রমাণের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে মঙ্গলবার মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
যদিও মস্কো এবং পিয়ংইয়ং সৈন্য স্থানান্তরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে উভয় দেশই সামরিক সম্পর্ক জোরদার করার অঙ্গীকার করেছে। গত জুনে দুই দেশের মাঝে অনুষ্ঠিত এক শীর্ষ সম্মেলনে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। উত্তর কোরিয়ার সৈন্য প্রেরণের বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার দাবিকে ‘‘ভুয়া খবর’’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে ক্রেমলিন।
বুধবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের রাশিয়ায় পৌঁছানোর প্রমাণ রয়েছে। এখন তারা সেখানে কী করবে, সেটি দেখতে হবে। রোমে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘‘রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার সৈন্য রয়েছে, এটির প্রমাণ আছে।’’‘‘তারা ঠিক কী করছে? সেটি দেখতে হবে। এই বিষয়গুলো আমাদের জানতে হবে,’’ বলেন অস্টিন।