দিনাজপুর প্রদিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জমি থেকে আগাম জাতের আলু তোলার হিড়িক পড়েছে। আর বাজারে এ নতুন আলুর বেশি দাম পেয়ে খুশি এখানকার আলু চাষিরা। প্রতি কেজি আলু ৭২ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আলুর ক্ষেত থেকেই। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাড়রা এখন ভিড় জমিয়েছেন উপজেলার হাট গুলোতে।
কৃষির ওপর নির্ভরশীল জেলা দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে প্রায় দুই যুগ থেকে আগাম আলু চাষ হয়ে আসছে। এখানকার চাষিরা আগাম বিভিন্ন জাতের আলুর আবাদ করে নিজেদের সচ্ছলতা ফিরেয়ে এনেছেন। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এখানকার উৎপাদিত আগাম জাতের আলু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষের চাহিদা মেটাচ্ছে। পাইকারি ও খুচরা সবজি বাজারে নতুন আলুর প্রচুর চাহিদা এবং দাম বেশি থাকায় এ জেলায় আগেভাগে উঁচু সমতল জমিতে চাষিদের লাগানো আগাম জাতের আলু তোলার হিড়িক পড়েছে। আলু তোলা নিয়ে কৃষক-কিষাণীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। খেত থেকে আলু তুলে বস্তায় ভরছেন। এ সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা মাঠে থাকা সেই বস্তাভর্তি আলু কিনে নিয়ে ধুয়ে পরিস্কার করে পিকআপ ভ্যান বা ট্রাকে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। বিগত সব বছরের চেয়ে এবছর আলুর দাম সবচেয়ে বেশি পাওয়ায় খুশি প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা।
উপজেলা জাফরপুর গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি এবার দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। আলু চাষে আমার খরচ হয়েছিলো ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আর আলু বিক্রয় করেছি ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে এবার প্রায় ১ লক্ষ টাকা লাভ হয়েছে।
উপজেলার শিব নগর ইউনিয়নের ওসমান গনি বলেন, আমি ৫০ শতক জায়গায় আগাম আলু চাষ করেছি এতে আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২০ শতক জমির আলু তুলেছি। আশা করছি সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৬০ হাজার টাকা লাভ হবে। আলু চাষে লাভের এমন কথা বলেন উপজেলার অধিকাংশ আলু চাষিরা।
অপরদিকে কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্র্তন হলেও কৃষি শ্রমিকরা আগের মতোই হাজিরায় কাজ করছেন। বর্তমানে মহিলারা মাধাপিছু হাজিরা পাচ্ছেন ৩০০ টাকা ও পুরুষরা পাচ্ছেন ৫০ টাকা। অধিকাংশ কৃষি শ্রমিকেরা বলেন, সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পেলেও শ্রমিকদের দাম বৃদ্ধি পায়না। আমরা যা আয় করছি তাতে আমাদের সংসার চলেন না। কৃষক লাভবান হলেও আমাদের পরিস্থিতি নিয়ে কারো মাধা ব্যাথা নাই। শুধু নির্বাচন আসলে মেম্বার,চেয়ারম্যানরা আমাদের খোঁজ খবর নেয় বাকি সময় তারা আমাদের চিনতেই চাায়না, বলে অভিযোগ করেন কৃষি শ্রমিকেরা।
কৃষি মাঠ থেকে আলু ক্রয় করাতে আসা মাজেদুর রহমান,বলেন আমরা মাঠ থেকে ৭৩ থেকে ৭৫ টাকা দলে আলু ক্রয় করছি। আলু গুলো স্থানীয় আমডু্িঙ্গবাজারে পাশে থাকা নদীতে ভালো করে ধুয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পাইকাড়দের কাছে বিক্রয় করবো। বর্তমানে বাহিরের পাটির কাছে ৭৫ থেকে ৭৭ টাকা ধরে বিক্রয় করছি। তারা আমাদের এই আলু পাবনা, রাজশাহী,নাটরে নিয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মোছাঃ রুম্মান আক্তার বলেন, কৃষকেরা আগাম জাতের আলু তুলতে শুরু করেছে এবং ফলনকৃৃত আলু বাজারে আসতে শুরু করেছে। এবছর আগাম জাতের আলুর ফলন ভালো ও চাহিদা বেশি। কৃষক ভালো দামও পাচ্ছে। আগামীতেও আলুর চাষ বেশি হবে এবং কৃষক লাভবান হবেন।
সম্পাদক : হালিমা খাতুন, নির্বাহী সম্পাদক : মুন্সি মোঃ আল ইমরান। MAA 23 Multimedia Limited এর পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১, মুঠোফোন : ০১৮১৭-৫৩০৯৫২, ০১৯৭৯-৭৯৯১৪৬। ইমেইল : dailybartomandeshsangbad@gmail.com
© All rights reserved © Maa 23 Multimedia Limited