ধর্ম ডেস্ক: আয়েশা বিনতে তালহা আত তাইমিয়া (রা.) ছিলেন একজন বিখ্যাত নারী সাহাবি। সপ্তম হিজরিতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বংশ সূত্রে তিনি আবু বকর (রা.)-এর মেয়ে উম্মে কুলসুম (রা.)-এর কন্যা। সে হিসেবে তিনি উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.)-এর বোনের মেয়ে। তাছাড়া খ্যাতনামা সাহাবি তালহা বিন উবায়দুল্লাহ (রা.) ছিলেন তাঁর সম্মানিত পিতা। ফলে বংশ মর্যাদায় তিনি উভয় দিক দিয়েই শ্রেষ্ঠ ছিলেন।
বিখ্যাত এই নারী সাহাবির ছোট সময় থেকেই হাদিসের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব ছিল। তিনি তাঁর খালা হজরত আয়েশা (রা.) থেকে হাদিস বর্ণনা করেন। আর তাঁর থেকে হাদিস বর্ণনা করেন তাঁর চার ভ্রাতুষ্পুত্র যথাক্রমে তালহা বিন ইয়াহইয়া, মুয়াবিয়া বিন ইসহাক, মুসা ও উবায়দুল্লাহ বিন ইসহাক, হাবিব বিন আবি আমরাহ, ফুজাইল ফাকিমি (রহ.) প্রমুখ। হাদিস বর্ণনার জগতে তিনি ছিলেন নির্ভরযোগ্য রাবি। ইয়াহইয়া বিন মায়িন (রহ.) তাঁকে হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নারী হিসেবে গণ্য করেছেন। এমনকি হাদিসের নির্ভরযোগ্য কিতাব সুনানে নাসাঈ ও মুয়াত্তা মালেকে তাঁর থেকে বর্ণিত হাদিস রয়েছে।
তা ছাড়া তিনি ছিলেন রূপে-গুণে অনন্য খ্যাতির অধিকারী। প্রথমে তাঁর বিবাহ হয় মামাতো ভাই আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান বিন আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর সঙ্গে। পরবর্তী সময়ে ইরাকের শাসনকর্তা মুসআব বিন জুবায়েরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি বিয়েতে মোহর হিসেবে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা ধার্য করেন। মুসআব বিন জুবায়ের নিহত হলে তাঁর বিয়ে হয় আব্দুল্লাহ বিন উবায়দুল্লাহ তাইমির সঙ্গে। তিনিও স্ত্রীকে বিয়েতে হাজার হাজার দিরহাম মোহরানা হিসেবে প্রদান করেন।
সম্মানিত ও প্রভাবশালী এই নারী সাহাবি ছিলেন সর্বমহলে সমাদৃত। খলিফা আব্দুল মালিক বিন মারওয়ান এবং পরবর্তী খলিফা তাঁর পুত্র হিশাম তাঁকে খুব সম্মান করতেন। একবার আয়েশা বিনতে তালহা খলিফা আব্দুল মালিকের নিকট প্রতিনিধি হিসেবে এলেন। সে সময় তিনি হজ করতে চাচ্ছিলেন। তখন খলিফা রাজকীয় ব্যবস্থাপনায় তাঁর সঙ্গে থাকা লোকদের বাহনস্বরূপ ৬০টি খচ্চর উপহার দিয়েছিলেন।
আরেকবারের ঘটনা। তিনি খলিফা হিশাম বিন আব্দুল মালিকের নিকট এলেন। খলিফা তাঁর প্রতি সম্মান দেখালেন এবং নানা উপঢৌকনে ভূষিত করলেন। অনন্য সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই নারী ১১০ হিজরিতে মদিনায় ইন্তেকাল করেন। (তারিখে দিমাশক : ৬৯/২৪৯, সিয়ারু আলামিন : নুবালা ৫/৭৪)।