গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা সংঘাত শেষে হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। এরই মধ্যে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে মুক্তি পেয়েছেন তিন ইসরায়েলি বেসামরিক নারী, যারা দীর্ঘ সময় ধরে হামাসের হাতে বন্দি ছিলেন। তবে তাদের মুক্তির পর, যেটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে তা হলো তাদের হাতে দেওয়া ‘উপহারের ব্যাগ’।
এই তিন নারী হলেন রোমি গনেন, এমিলি ডামারি এবং ডোরন স্টেইনব্রেগার। ৪৭১ দিন বন্দি থাকার পর, তাদেরকে ২০ জানুয়ারি রেডক্রসের মাধ্যমে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু শুধুমাত্র মুক্তি নয়, তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে ‘উপহার ব্যাগ’, যা নিয়ে এক ধরনের কৌতূহল সৃষ্টি হয়।
বন্দিদের হাতে দেওয়া এই উপহারের ব্যাগে কি ছিল, তা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যম এবং ভিডিও ফুটেজ অনুযায়ী, ব্যাগে ছিল গাজা উপত্যকার একটি মানচিত্র, তাদের বন্দি অবস্থায় তোলা ছবি এবং একটি সনদ। সনদে ছিল বড় করে লেখা, “মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”এই সনদ হাতে নিয়ে হাসিমুখে ছবিও তোলেন মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিরা।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম “জেরুজালেম পোস্ট”এবং “এনডিটিভি”জানিয়েছে, হামাসের এই ‘উপহার’ দেয়ার উদ্যোগটিকে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। অনেক ইসরায়েলি গণমাধ্যম এমনকি দাবি করেছে যে, বন্দিদের সনদ গ্রহণ ও ছবি তোলার অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে এবং এটি তাদের ওপর একধরনের মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছে।
তবে, হামাসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, এটি একটি স্মারক হিসেবে দেওয়া হয়েছে, যাতে বন্দিরা তাদের দীর্ঘ বন্দি জীবনের স্মৃতি ধারণ করতে পারেন। হামাসের সশস্ত্র শাখা “এজেদ্দিন আল-কাসাম ব্রিগেড”এই ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। হামাস সমর্থকরা এই উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন, তবে ইসরায়েলি মিডিয়া এবং বিশ্বব্যাপী অনেকেই এটি একটি ‘অসুস্থ মানসিকতা’ বলে অভিহিত করেছেন।
এটি কেবল একটি যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ঘটনা নয়, বরং এটি আরো একটি তীব্র রাজনৈতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপটের অংশ, যেখানে যুদ্ধের ধরন এবং প্রতিশোধের নতুন নতুন কৌশল প্রতিদিন সামনে আসছে।