আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা উপত্যকাকে “খালি” করে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ফিলিস্তিনিদের মিশর ও জর্ডানে স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তার এই বক্তব্য বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্প জানান, তিনি ইতোমধ্যে জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গেও আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। তার মতে, গাজার চলমান সংকট নিরসনে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া জরুরি।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা ও বিতর্ক
এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প বলেন, “আমরা প্রায় ১৫ লাখ মানুষের কথা বলছি। গাজার পুরো এলাকাটি খালি করে দিলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “এই অঞ্চল শত শত বছর ধরে সংঘাতের সাক্ষী হয়ে আছে। সময় এসেছে কিছু একটা করার।”
তবে ট্রাম্পের এই বক্তব্য নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই এটিকে “জাতিগত নিধন” বা “ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি” হিসেবে দেখছেন। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলছে, এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে।
মিশর ও জর্ডানের অবস্থান
জর্ডান ও মিশর বরাবরই ফিলিস্তিনিদের গাজায় থাকার পক্ষে। তারা মনে করে, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়া হলে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধিকারের পরিপন্থী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যা ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই বক্তব্য ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিকদের “গাজা খালি করার” পরিকল্পনার সঙ্গে মিলে যায়। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জর্ডানে প্রায় ২৪ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী রয়েছেন, যাদের অনেকে ১৯৪৮ ও ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। অন্যদিকে, মিশরেও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শরণার্থী রয়েছেন, যারা সাম্প্রতিক সংঘাতের কারণে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিরতা তৈরি হতে পারে এবং ফিলিস্তিন সংকট আরও ঘনীভূত হবে। এখন দেখার বিষয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই বিষয়ে কী প্রতিক্রিয়া জানায়।