আনোয়ার হোসেন : যশোরের ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীতে চলছে এখন আর দম ফেলার শুযোগ নেই চাষিদের। আসন্ন তিন দিবসের বাজার ধরতে ব্যস্ত ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীগন। প্রকৃতিতে গরমের আভাস থাকায় গোলাপের প্রস্ফুটন ঠেকাতে গোলাপ-কলিতে পরানো হচ্ছে ক্যাপ।
এরইমধ্যে দাম বাড়তে শুরু করেছে গোলাপের। গদখালী ফুলের বাজারও জমে উঠছে ধীরে ধীরে। তিন দিবস- বসন্ত উৎসব, ভালোবাসা দিবস আর মাতৃভাষা দিবস ঘিরে শত কোটি টাকার ফুল বেচাকেনার প্রত্যাশা করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
গদখালী ফুলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাইকেল-ভ্যানে বাহারি ফুল নিয়ে বাজারে এসেছেন চাষিরা। তাদের কারও কাছে গোলাপ, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা; কারও কাছে জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকাসহ বাহারি সব ফুল। দূরদূরান্ত থেকে আসা ব্যাপারীরা সেই ফুল কিনছেন। ফুল বেচাকেনার এমন হাঁকডাক যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের সড়ক ঘেঁষে গড়ে ওঠা ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের গদখালী বাজারের। হঠাৎ গরম পড়ায় ফুল ফুটে যাওয়ায় বাজারে ফুলের যোগানও বেশি। গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবেরা, চন্দ্র মল্লিকা, গাঁদা ফুলের দাম কিছুটা কম হলেও ঊর্ধ্বমুখী গোলাপের দাম। মাত্র কয়েকদিন আগেও যে গোলাপ বিক্রি হয়েছে ৩ থেকে ৫ টাকায়, সেই গোলাপ এখন বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকা দরে।
চাষিদের দাবি, বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ২১শে ফ্রেরুয়ারী কে সামনে রেখে বাড়তে শুরু করেছে ফুলের দাম। সামনের দিনগুলোতে ফুলের দাম আরও বাড়বে এবং তারা লাভবান হবেন। ’গোলাপের দাম মূলত আকার, রং ও সৌন্দর্যের ওপর নির্ভর করে বলেও তিনি জানান।
গদখালীর টাওরা গ্রামের ফুলচাষি কামাল সরকার বলেন, ‘আমার কাছে যে চায়না গোলাপ রয়েছে, তার দাম প্রতি পিস ২৫ টাকা। দেখতে সুন্দর ও বেশ কয়েক দিন রাখা যায় বলেই এর দাম বেশি। ২৫ কাঠা জমিতে রয়েছে চায়না গোলাপ। আশা করছি ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে ৩০ টাকার বেশি দাম পাবো এই গোলাপের।
এদিকে বসন্তবরণ ও ভালোবাসা দিবসে গোলাপ ফুলের চাহিদা বৃদ্ধি পায় কয়েকগুণ। ফুলচাষিরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোলাপ ফুল বিক্রি করে বাড়তি টাকা রোজগার করেন। তবে মাঘেও শীত নেই। অনুভূত হচ্ছে গরম। এই গরমে ফুল সময়ের আগেই ফুটে যাচ্ছে। তাই দ্রুত ফুল কেটে ফেলতে হচ্ছে। ক্ষতির মুখে পড়েছেন ফুলচাষিরা। এমন পরিস্থিতিতে ফুলচাষিরা তাদের ফুল সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করছেন ক্যাপ। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই ফুল কাটা হবে। কিছু ফুল কাটা হবে বসন্তের দিন সকালে। আগাম ফুল কেটে রাখলে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে এর চাহিদা যেমন থাকে না, তেমনি দামও পাওয়া যায় না। এজন্য যেন কলি না ফোটে এবং পাতা ঝরে না পড়ে সেজন্য তারা কলিতে ক্যাপ পরিয়ে দিচ্ছেন।
ফুল উৎপাদক ও বিপণন সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, ‘চলতি মৌসুমে ফুলের উৎপাদন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আসন্ন তিনটি বিশেষ দিবস ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। কোনো দুর্যোগ এবং রাজনৈতিক কোনো প্রভাব না পড়লে অন্তত ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আশাবাদী তারা।’
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, যশোর প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ করা হয় এ ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লক্ষাধিক মানুষ জড়িত। আসন্ন বসন্ত, ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ২১শে ফ্রেরুয়ারী দিবসে ব্যাপক ফুল বিক্রি হলে চাষিদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে বলেও সংশ্লিষ্টরা আশা করছে।
সম্পাদক : হালিমা খাতুন, নির্বাহী সম্পাদক : মুন্সি মোঃ আল ইমরান। MAA 23 Multimedia Limited এর পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১, মুঠোফোন : ০১৮১৭-৫৩০৯৫২, ০১৯৭৯-৭৯৯১৪৬। ইমেইল : dailybartomandeshsangbad@gmail.com
© All rights reserved © Maa 23 Multimedia Limited