অনলাইন ডেস্ক: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রশাসনিক ভবনসহ একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি পূরণের জন্য বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটার মধ্যে সময় বেঁধে দেওয়া হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় তারা এ পদক্ষেপ নেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে অনেকের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি জানান এবং তা না মানলে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না এবং থাকলে আজীবন বহিষ্কারের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি করা।
২. গতকালের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা, বহিষ্কারসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
৩. ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বাইরে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের রাখা।
৪. আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় প্রশাসন থেকে বহন করা।
৫. ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ।
এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘‘বেলা একটা পর্যন্ত আমাদের আলটিমেটাম ছিল। প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমাদের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়া হয়নি। তাই আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবন, বিভিন্ন একাডেমিক ভবন ও বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি।’’
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি নাকচ করা হয়। তবে অন্যান্য দাবিগুলো মেনে নেওয়া হয়। সভায় নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তগুলো গৃহীত হয়:
- আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত।
- ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা। রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলে তাকে বহিষ্কার বা চাকরিচ্যুত করা হবে।
- গত ১৮ ফেব্রুয়ারির হামলায় জড়িতদের বহিষ্কার, বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মামলা করা।
- আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে।
- শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সামরিক বাহিনীর সহায়তা নেওয়া।
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনলাইনে সিন্ডিকেট সভায় সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘‘সিন্ডিকেট সভায় ছাত্রদের সব দাবি নিয়েই আলোচনা হয়। সভায় ছাত্রদের সব দাবি মেনে নেওয়া হলেও ভিসিসহ কয়েকজনের পদত্যাগের দাবিটি নাকচ হয়।’’
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (নর্থ) মো. নাজমুল হাসান রাজীব জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। তবে ক্যাম্পাসের গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান মো. ইয়াহিয়া বলেন, ‘‘ছাত্রদল কারও ওপর হামলা করেনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আমাদের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে।’’
সূত্র: এফএনএস
সম্পাদক : হালিমা খাতুন, নির্বাহী সম্পাদক : মুন্সি মোঃ আল ইমরান। MAA 23 Multimedia Limited এর পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১, মুঠোফোন : ০১৮১৭-৫৩০৯৫২, ০১৯৭৯-৭৯৯১৪৬। ইমেইল : dailybartomandeshsangbad@gmail.com
© All rights reserved © Maa 23 Multimedia Limited