আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের নেতা ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর এই মন্তব্য জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ককে আরও তিক্ত করে তুলতে পারে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সামগ্রিক পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রাম্প সম্প্রতি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘‘নির্বাচন ছাড়া একজন স্বৈরশাসক জেলেনস্কির দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, না হলে তাঁর আর কোনো দেশ থাকবে না।’’ উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জেলেনস্কি। ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর দেশটিতে সামরিক আইন জারি করা হয়, যার ফলে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হয়নি। ইউক্রেনীয় আইনে যুদ্ধকালীন সময়ে নির্বাচন না হওয়ার বিধান রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনকে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দিয়ে আসছে। তবে ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে ওয়াশিংটনের নীতিতে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি মস্কোর সঙ্গে আলোচনা শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং বলেছেন যে তিনি চাইলে এই যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে পারবেন। ট্রাম্পের এই অবস্থান ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিষয়ে নতুন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি, আমার এই যুদ্ধ শেষ করার ক্ষমতা আছে। আমার মতে, যুদ্ধ শেষ করা–সংক্রান্ত আলোচনা ভালোভাবেই এগোচ্ছে। তবে ইউক্রেনের নেতারা বলছেন, তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আমি বলতে চাই, আপনারা সেখানে তিন বছর ছিলেন, আপনাদের এটা শেষ করা দরকার ছিল।’’
ট্রাম্প শুধু জেলেনস্কিকে স্বৈরাচার বলেই থেমে থাকেননি, বরং তাঁকে ‘সফল কৌতুক অভিনেতা’ বলেও বিদ্রূপ করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘‘জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়ে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ করিয়েছেন এমন এক যুদ্ধে, যা কখনোই জেতা সম্ভব নয়। এটি এমন এক যুদ্ধ, যা জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র ও ‘ট্রাম্প’ ছাড়া কখনোই সমাধান করতে পারবেন না।’’
এছাড়াও তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘আমি ইউক্রেনকে ভালোবাসি, কিন্তু জেলেনস্কি ভয়াবহ কাজ করেছেন। তাঁর দেশ বিধ্বস্ত হয়েছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ অপ্রয়োজনীয়ভাবে মারা গেছে, এবং এই ধ্বংসযজ্ঞ এখনো অব্যাহত আছে।’’
ট্রাম্প সম্প্রতি জানিয়েছেন, চলতি মাসেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেছেন, এই যুদ্ধ কেবলমাত্র তাঁর উদ্যোগেই শেষ হতে পারে।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এবং ইউক্রেন নিয়ে তাঁর সাম্প্রতিক অবস্থান পশ্চিমা বিশ্বে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থনের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে এখন নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।