ধর্ম ডেস্ক: বিপদ-আপদ, রাগ, ক্ষোভ ও ভয় মানুষের ভেতর অস্থিরতা তৈরি করে। মানসিক অস্থিরতা মানুষকে অবসন্ন এবং তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে। মানুষের ভেতর হতাশার জন্ম দেয়। আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস মানুষকে এই অস্থিরতা থেকে মুক্তি দিতে পারে। ঈমানই মানসিক অস্থিরতার উত্তম প্রতিষেধক এবং মানসিক প্রশান্তি মুমিনের প্রতি আল্লাহর উপহার। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনিই মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি দান করেন যেন তারা তাদের ঈমানের সঙ্গে ইমান দৃঢ় করে নেয়। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর বাহিনীগুলো আল্লাহরই এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ’ (সুরা ফাতাহ, আয়াত : ৪) মুমিনের হৃদয়ে ইমান যত প্রজ্জ্বল হবে, তার মানসিক অস্থিরতাও তত কম হবে; বরং অন্যকে অস্থির হতে দেখলে, সে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন। এই মর্মে ইরশাদ হয়েছে, ‘সে তাঁর সঙ্গীকে বলেছিল, বিষণ্ন হইয়ো না, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন। অতঃপর আল্লাহ তাঁর ওপর তাঁর প্রশান্তি বর্ষণ করেন এবং তাকে শক্তিশালী করেন এমন এক সেনাবাহিনী দ্বারা, যা তোমরা দেখোনি। তিনি অবিশ্বাসীদের কথা হেয় করেন। আল্লাহর কথাই সর্বোপরি এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৪০) ঈমানের পর আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদত মুমিনের অন্তরে প্রশান্তি তৈরি করে। যেমনটি নিম্নোক্ত আয়াত দ্বারা বোঝা যায়। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ মুমিনদের ওপর সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা বৃক্ষতলে তোমার কাছে বাইআত গ্রহণ করে। তাদের অন্তরে যা ছিল তা তিনি অবগত ছিলেন। তাদের তিনি দান করেন প্রশান্তি এবং উপহার দেন আসন্ন বিজয়। ’ (সুরা ফাতাহ, আয়াত : ১৮) বিপরীতে অবিশ্বাস ও পাপাচার মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন অবিশ্বাসীরা তাদের অন্তরে পোষণ করত গোত্রীয় অহমিকা-অজ্ঞতার যুগের অহমিকা, তখন আল্লাহ তাঁর রাসুল ও মুমিনদের স্বীয় প্রশান্তি দান করলেন। আর তাদের তাকওয়ার বাক্যে সুদৃঢ় করলেন এবং তারাই ছিল এর অধিকতর যোগ্য ও উপযুক্ত। আল্লাহ সব বিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখেন। ’ (সুরা ফাতাহ, আয়াত : ২৬) ইবাদতের মাধ্যমে যেমন অন্তরে প্রশান্তি আসে, তেমনি প্রশান্ত হৃদয়ে ইবাদত করাও আবশ্যক। এজন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন নামাজ শুরু হয়, তখন দৌড়ে গিয়ে নামাজে যোগদান করবে না; বরং হেঁটে গিয়ে যোগদান করবে। নামাজে ধীর-স্থিরভাবে যাওয়া তোমাদের জন্য অপরিহার্য। কাজেই জামাতের সঙ্গে নামাজ যতটুকু পাও আদায় করো, আর যা ছুটে গেছে, পরে তা পূর্ণ করে নাও। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৯০৮) শায়খ ইবনে উসাইমিন (রহ.) বলেন, প্রশান্তি হলো অন্তরের অস্থিরতা ও হতাশার বিপরীত বিষয়। মানসিক প্রশান্তির প্রতিফলন বান্দার বাহ্যিক অবয়বের ওপরও পড়ে। তখন বান্দার কথা ও কাজে অস্থিরতা থাকে না। নিঃসন্দেহে প্রশান্তির মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার প্রতি অনুগ্রহ করে থাকেন। (শরহু রিয়াজুস সালিহিন : ৪/৯০)
সম্পাদক : হালিমা খাতুন, নির্বাহী সম্পাদক : মুন্সি মোঃ আল ইমরান। MAA 23 Multimedia Limited এর পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১, মুঠোফোন : ০১৮১৭-৫৩০৯৫২, ০১৯৭৯-৭৯৯১৪৬। ইমেইল : dailybartomandeshsangbad@gmail.com
© All rights reserved © Maa 23 Multimedia Limited