অনলাইন ডেস্ক : জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি মনে করেন, এটি মূলত একটি কৌশল, যার মাধ্যমে মাফিয়াচক্রকে পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার পর জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে বিএনপির বর্ধিত সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। দীর্ঘ সাত বছর পর আয়োজিত এই সভায় দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
তারেক রহমান বলেন, “গণতন্ত্রকামী জনগণ মনে করে, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসন। এটি গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাবিরোধী একটি পরিকল্পনা। বিএনপি এই ফাঁদে পা দেবে না।”
তারেক রহমান বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “সরকার এখনও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। খুন, হত্যা, ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাই বাড়ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধেও সরকার ব্যর্থ হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে এখনই প্রস্তুত করতে হবে। সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতোমধ্যেই জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। নিজেদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “বিএনপি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণহত্যাকারী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করব।”
তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রের সংস্কারের জন্য বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি রয়েছে। এটি স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার সনদ। তবে এটি চূড়ান্ত নয়, প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন আনা হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা।”
তারেক রহমান বলেন, “শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর এখন পর্যন্ত ১৬-১৭টি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, তাই নতুন দলগুলোর প্রতি স্বাগত জানাই। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জনগণই নেবে।”
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “মাফিয়াচক্রকে পুনর্বাসনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন এবং দ্রুত একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।”
এই বর্ধিত সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ দলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। নেতাকর্মীরা তাদের মতামত তুলে ধরে দলের ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা করেন।