নবম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ওঠে ভারত, ফলে ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় দুবাইয়ে। তবে টুর্নামেন্টের মূল আয়োজক ছিল পাকিস্তান। স্বাভাবিকভাবেই ফাইনাল ম্যাচের আনুষ্ঠানিকতায় আয়োজক দেশের প্রতিনিধি থাকার কথা। কিন্তু পাকিস্তানের কাউকেই আমন্ত্রণ জানায়নি আইসিসি। তাই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) আইসিসিকে ফেলেছে প্রশ্নের মুখে। পিসিবির চেয়ারম্যান মহসিন নাকভিকে ফাইনাল ম্যাচের আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল আইসিসি। তবে পিসিবির পক্ষ থেকে আগেই নিশ্চিত করা হয় যে নাকভি অসুস্থ আছেন এবং তিনি পারবেন না। তার বদলে অন্য কাউকে নেওয়া হবে এমনটিই অনুমিত ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের আর কাউকেই ডাকা হয়নি ফাইনালের মঞ্চে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক বোর্ডের চিফ অপারেটিং অফিসার সুমাইর আহমেদ ছিলেন এই টুর্নামেন্টের পরিচালকও। পিসিবির পক্ষ থেকে ফাইনাল ম্যাচে উপস্থিত থাকার জন্য প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল তাকে। টুর্নামেন্টের পরিচালক হিসেবেও ফাইনাল ম্যাচের দিন দুবাইয়ে উপস্থিত ছিলেন সুমাইর। তবে ফাইনাল ম্যাচের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য সুমাইরকে আমন্ত্রণ জানায়নি আইসিসি। এতে চটে গেছে টুর্নামেন্টের আয়োজক পিসিবি। আয়োজক দেশের কোনো প্রতিনিধিই ফাইনাল ম্যাচের আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত না থাকা তো বেমানানই বটে! তাই আইসিসিকে জেরার মুখে ফেলেছে পিসিবি। ভারত নিউজিল্যান্ডকে পরাজিত করে শিরোপা জয়ের পর উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে চারজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন আইসিসির চেয়ারম্যান জয় শাহ, বিসিসিআইয়ের দুই প্রতিনিধি এবং নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের একজন প্রতিনিধি। জয় শাহ ছাড়া উপস্থিত কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন বিসিসিআই সভাপতি রজার বিনি, বিসিসিআই সম্পাদক দেবজিত সইকিয়া এবং নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের পরিচালক রজার টোয়েস। সাধারণত কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে অংশ নেওয়া দেশের প্রতিনিধিরা আইসিসির পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতায় থাকেন না, যদি না আয়োজক দেশ ফাইনালে অংশ নেয়। সাধারণত আয়োজক দেশের প্রতিনিধিরা ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেন। পিসিবি চেয়ারম্যান মোহসিন নকভি মূলত এই অনুষ্ঠানে থাকার কথা ছিল, তবে পিসিবি জানায় যে তিনি অসুস্থ থাকায় দুবাইয়ে যেতে পারেননি। পিসিবি আশা করেছিল যে পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে সুমাইর উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু বিসিসিআইয়ের সম্পাদক দেবজিত সইকিয়া উপস্থিত থাকার ব্যাপারটি মানতেই পারেনি পিসিবি। পিসিবির বিশ্বাস ছিল, নকভির পরিবর্তে কাউকে পাঠানোর বিষয়ে আইসিসিরই যোগাযোগ করার দায়িত্ব ছিল। পিসিবি ক্ষুব্ধ যে ফাইনাল ম্যাচের কোনো পর্যায়েই আইসিসির কোনো প্রতিনিধি বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি পাকিস্তানের একজন প্রতিনিধিকে ম্যাচ-পরবর্তী মঞ্চে রাখার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য। ফলে, আইসিসির কাছে এই বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে পিসিবি। এর আগে ফাইনাল ম্যাচ শেষেই ব্যাপারটি নজরে আনেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব আখতার।রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস খ্যাত সাবেক এই ক্রিকেটার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাৎক্ষনিকভাবে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘খুব অদ্ভুত একটা ব্যাপার দেখলাম। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের একজনও ওখানে ছিলেন না। অথচ পাকিস্তানই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক।’ কেন পিসিবি বা পাকিস্তানের কেউ পুরস্কার দেওয়ার মঞ্চে ছিলেন না, তা ভেবেই পাচ্ছেন না শোয়েব। তিনি আরো বলেন, ‘পাকিস্তানের একজন মানুষকেও ওখানে দেখলাম না। ব্যাপারটা বুঝতেই পারছি না। কেউ কেন ট্রফি দিতে এলেন না? প্লিজ এটা নিয়ে ভাবুন। বিশ্বমঞ্চে তো আপনাদের থাকতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক যে আমি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের একজনকেও সেখানে দেখলাম না। আমরা এটার আয়োজক, অথচ আমাদের কেউই নেই।’