নির্ধারিত সময় শেষ হলো ১-০ গোলে। স্বাভাবিকভাবেই পিএসজি জিতে গেছে ম্যাচটি। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে কোন দল? লিভারপুল না পিএসজি? প্রথম লেগে যে পিএসজির ঘরের মাঠ থেকে ১-০ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছিলো লিভারপুল! ফলে দুই লেগ মিলে দু’দল ১-১ সমতায়। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এমন পরিস্থিতিতে লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ডে খেলা গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। এখনেও ৩০ মিনিটে আর কেউ কোনো গোল করতে পারলো না। ১২০ মিনিটের খেলা শেষ হয়ে গেলো। জয়-পরাজয় নির্ধারণ হলো না। সুতরাং, ভাগ্যের খেলা টাইব্রেকারে নির্ধারণ করতে হবে বিজয়ী দলকে। যারা যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে। প্রথম শট নিতে আসেন পিএসজির ভিতিনহা। খুব কৌশলী একটি শট নিলেন। ডান পাশে মাটি গড়ানো, খুব জোরালো কোনো শট ছিল না সেটি। কিন্তু গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার যতক্ষণে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, ততক্ষণে বল জালে আশ্রয় নিয়েছে। ১-০। লিভারপুলের প্রথম শট নিতে আসেন মোহাম্মদ সালাহ। বাম প্রান্তে বুলেট গতির শট নিলেন। পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডোনারুমা নড়ারও সুযোগ পাননি, বল জালে। ১-১। পিএসজির দ্বিতীয় শট নিলেন গনকালো রামোস। বাম কোনের শটটি জড়িয়ে দিলেন লিভারপুলের জালে। ২-১। পিএসজির দ্বিতীয় শট নিতে আসেন ডারউইন নুনেজ। ডান কোনে মাটিতে গড়ানো শট নিলেন। ডোনারুমা ঝাঁপিয়ে পড়ে বলটি ঠেকিয়ে দিলেন। গোল হলো না। ২-১। এরর পিএসজির তৃতীয় শট নিলেন ওসমান ডেম্বেলে। তার শটটাও ছিল বুলেট গতির। পোস্টের ডানপাশ দিয়ে জড়িয়ে গেলো জালে। ৩-১। লিভারপুলের তৃতীয় শট নিতে আসেন কার্টিস জোন্স। তিনিও মাটি কামড়ানো শট নিলেন। বাম প্রান্তে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই বল ঠেকিয়ে দিলেন ডোনারুমা। এবার গোল হলো না। টানা দুটি মিস। ব্যবধান ৩-১। পিএসজির চতুর্থ শট নিতে আসেন ডিজায়ার দুয়ে। গোল হলেই খেলা শেষ। খুব জোরালো শট নিয়েছেন তা নয়। তবে অ্যালিসন বলের কাঁছেও পৌঁছাতে পারেননি। গোল। ৪-১। সঙ্গে বিজয়ের আনন্দে দৌড়াতে শুরু করেছেন পিএসজি ফুটবলার-কোচ এবং কর্মকর্তারা। পুরো অ্যানফিল্ড তখন একেবারে স্তব্ধ। মাঠে পিএসজির ফুটবলাররা উল্লাস করছিলো, আর গ্যালারি থেকে নীরবে প্রস্থান করছিলো লিভারপুল সমর্থকরা। কারণ, টাইব্রেকারে লিভারপুলকে ১-৪ গোলে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্সশিপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে ফরাসী ক্লাব পিএসজি। কোয়ার্টার ফাইনালে পিএসজি মুখোমুখি হবে হয় অ্যাস্টন ভিলা না হয় ক্লাব ব্রুগের। যদিও এরই মধ্যে অ্যাস্টনভিলা ৩-১ গোলে এগিয়ে রয়েছে। সে ক্ষেত্রে পিএসজিকে হয়তো কোয়ার্টার ফাইনালে আরও একবার ইংল্যান্ডে এসে খেলতে হতে পারে। প্রথম লেগের ম্যাচে প্যারিস থেকে ১-০ গোলের জয়ে এগিয়ে থাকায় কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাসী ছিল লিভারপুল; কিন্তু অ্যানফিল্ডে ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণ পরই, ১২তম মিনিটে পুরো গ্যালারিকে স্তব্ধ করে দিয়ে লিভারপুলের জালে বল জড়িয়ে দেন ওসমান ডেম্বেলে। বক্সের মধ্যে ব্র্যাডলি বারকোলাকে ব্লক করেছিলেন ইব্রাহিম কৌনাতে। তবে তিনি বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। বরং বল ঠেলে দেন গোলরক্ষক অ্যালিসন থেকে একটু দুরে। দৌড়ে আসা ওসমান ডেম্বেলে সুযোগটা কাজে লাগালেন। তিনি শুধু পা ছোঁয়ানোর সুযোগটা কাজে লাগিয়েছেন। খালি জালে জড়িয়ে দেন বলটি। ২০১৭ সালে সেভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের মাঠে এত দ্রুত লিভারপুল কোনো গোল হজম করেনি। ম্যাচের শুরুতেই মোহাম্মদ সালাহর দারুণ একটি গোল ঠেকে যায় শেষ মুহূর্তের ডিফেন্সে। ইবরাহিম কৌনাতের দারুণ একটি চেষ্টা ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন পিএসজি গোলরক্ষক ডোনারুমা। প্রায় পুরো ম্যাচেই এভাবে অনেকগুলো গোলের সুযোগ মিস করে দুই দলই। ফলে ডেম্বেলের গোলেই শেষ হয় ম্যাচ। পিএসজির কাছে টাইব্রেকারে হারের পর লিভারপুল কোচ আরনে স্লট বলেন, ‘সম্ভবত আমি আমার ক্যারিয়ারে সেরা একটি ম্যাচ দেখলাম আজ। আমরা সম্ভবত সৌভাগ্যের পেছনে দৌড়েছি। কিন্তু সেটা ধরা দেয়নি।’
সম্পাদক : হালিমা খাতুন, নির্বাহী সম্পাদক : মুন্সি মোঃ আল ইমরান। MAA 23 Multimedia Limited এর পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১, মুঠোফোন : ০১৮১৭-৫৩০৯৫২, ০১৯৭৯-৭৯৯১৪৬। ইমেইল : dailybartomandeshsangbad@gmail.com
© All rights reserved © Maa 23 Multimedia Limited