অপেক্ষার প্রহর শেষে বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখলেন ইংল্যান্ড প্রবাসী ফুটবলার হামজা চৌধুরী। সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোমবার সকাল থেকেই ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। ‘ওয়েলকাম টু মাদারল্যান্ড হামজা’Ñএমন সব স্লোগানে মুখর ছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। এরই মধ্যে দিয়ে অপেক্ষার অবসান ঘটলো।
জানা গেছে, ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে খেলে সরাসরি সিলেটের বিমানে ওঠেন হামজা। বাংলাদেশ সময় রাত দু’টায় বাংলাদেশ বিমানের ম্যানচেস্টার থেকে সিলেট ফ্লাইটে রওনা হন হামজা। দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে রওনা দেন নিজ গ্রামের উদ্দেশেÑহবিগঞ্জের স্নানঘাটে।
হামজা ও তার পরিবারকে বরণ করে নিতে এয়ারপোর্টে বাফুফের ৭ জন নির্বাহী সদস্য রয়েছেন। গতকাল চার সদস্যের সঙ্গে আজ যোগ দিয়েছেন আরও তিন সদস্য। ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার পরপরই হামজাকে বরণ করে নেন বাফুফে কর্তারা।
তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরেই ফিফা থেকে বাংলাদেশের হয়ে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছিলেন হামজা। এরপর থেকেই দেশের ফুটবল অঙ্গনে তাকে ঘিরে তৈরি হয় ব্যাপক উন্মাদনা। সেই উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ হয় যখন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ভারত ম্যাচের প্রাথমিক স্কোয়াডে রাখেন তাকে। এখন চূড়ান্ত দলে হামজার থাকা একপ্রকার নিশ্চিত।
সিলেট ব্যুরো থেকে মুকিত রহমানী জানান, বিমানবন্দরে হামজাকে অভ্যর্থনা জানাবেন সিলেটের ক্রীড়ানুরাগী ও ক্ষুদে ফুটবলাররা। হামজার আগমন সামনে রেখে গতকাল সিলেট বিমানবন্দর সড়কসহ তার গ্রামের বাড়িতে একাধিক তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। তবে সিলেটে কোনো কর্মসূচি নেই, হবিগঞ্জের বাহুবলে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে হামজাকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তাকে এসকট করে নগরী পার করে দেওয়া হবে। একইভাবে জেলা পুলিশও সড়কে তার নিরাপত্তা দেবে।
হামজার আগমন ঘিরে নিজ গ্রাম স্নানঘাটসহ পুরো জেলায় বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। হবিগঞ্জ প্রতিনিধি রাসেল চৌধুরী জানান, সাজসাজ রব পড়েছে হামজার নিজ গ্রামে। তাকে অভিনন্দন বার্তা জানিয়ে ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। নিজ এলাকার কৃতী সন্তানকে বরণ করতে প্রস্তুত গ্রামবাসী।
প্রসঙ্গত, শান্ত ও নম্র স্বভাবের হামজা খেলোয়াড়ি জীবনে যেমন ছড়িয়েছেন খ্যাতি, তেমনি গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছেও অত্যন্ত প্রিয়। তাই তো হামজাও দিচ্ছেন তাদের আস্থার প্রতিদান। গ্রামের বাড়ি স্নানঘাটে গড়ে তুলেছেন একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা। যেখানে পড়াশোনা করছে এতিম শিশুরা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, প্রায় ১১ বছর পর দেশে আসছেন হামজা চৌধুরী।