সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
জরুরী বিজ্ঞপ্তি
দৈনিক বর্তমান দেশ সংবাদ এ সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১,  মুঠোফোন :  ০১৮১৭-৫৩০৯৫২।

প্রশান্ত মহাসাগরে ৯৫ দিন ভাসমান: পেরুর জেলের অবিশ্বাস্য বেঁচে থাকার গল্প

  • আপডেট এর সময় : সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫
  • ১৭ বার পঠিত হয়েছে

প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে ৯৫ দিন ধরে ভেসে থেকে এক অদম্য মানসিকতার জেলে, ম্যাক্সিমো নাপা কাস্ত্রো, মৃত্যুকে জয় করে ফিরেছেন পরিবারের কাছে। বেঁচে থাকার জন্য তাকে নির্ভর করতে হয়েছে প্রকৃতির দান—বৃষ্টির পানি, তেলাপোকা, পাখি এবং সামুদ্রিক কচ্ছপের ওপর। এই অবিশ্বাস্য কাহিনি বিশ্ববাসীকে চমকিত করেছে।

গত ৭ ডিসেম্বর, ৬১ বছর বয়সী ম্যাক্সিমো পেরুর দক্ষিণ উপকূলীয় শহর মারকোনা থেকে মাছ ধরতে সমুদ্রে পাড়ি জমান। পরিকল্পনা ছিল দুই সপ্তাহের এক অভিযানের। কিন্তু যাত্রার দশম দিনই বিধ্বংসী এক ঝড়ে তার নৌকা পথ হারিয়ে ফেলে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, তার সঙ্গে থাকা খাবার ও পানীয় দ্রুত ফুরিয়ে যায়, ফলে শুরু হয় এক কঠিন সংগ্রামের সময়।

সমুদ্রে ভেসে থাকার সময় কাস্ত্রো বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করেন। খাবারের জন্য প্রথমদিকে তেলাপোকা ও পাখি খেয়েছিলেন, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাকে সামুদ্রিক কচ্ছপ ধরেও বেঁচে থাকতে হয়েছে। তবে শেষ ১৫ দিন তার জন্য সবচেয়ে কঠিন ছিল—এই সময় তিনি সম্পূর্ণ অনাহারে কাটিয়েছেন।

নিজেকে বেঁচে রাখার একমাত্র শক্তি ছিল তার পরিবার। বিশেষ করে মাত্র দুই মাস বয়সী নাতনির কথা তাকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করেছে। মৃত্যুর ছায়া প্রতিনিয়ত ঘনিয়ে এলেও তিনি হার মানেননি।

প্রায় তিন মাস পর, বুধবার ইকুয়েডরের টহল জাহাজ ‘ডন এফ’ তাকে সমুদ্রের গভীরে, উপকূল থেকে ১,০৯৪ কিলোমিটার (৬৮০ মাইল) দূরে খুঁজে পায়। তখন তিনি গুরুতর পানিশূন্য অবস্থায় ছিলেন। দ্রুত তাকে পাইতা শহরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তার ভাই তাকে সাদরে গ্রহণ করেন। এরপর বিমানে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পেরুর রাজধানী লিমায়। বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে আবেগঘন পুনর্মিলন হয়, যেখানে তার মেয়ে ইনেস নাপা তাকে স্বাগত জানান এবং দেশের ঐতিহ্যবাহী পানীয় ‘পিসকো’ উপহার দেন।

কাস্ত্রোর নিজ এলাকা সান আন্দ্রেসে তার ফেরাকে কেন্দ্র করে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। প্রতিবেশী ও স্বজনরা রাস্তায় সাজসজ্জার আয়োজন করেন এবং তার সম্মানে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। তার ভাগ্নি লেইলা তোরেস নাপা জানান, সমুদ্রে ভেসে থাকার সময় কাস্ত্রোর জন্মদিন কেটেছে মাত্র একটি বিস্কুট খেয়ে, তাই এবার পরিবারের সদস্যরা বিশেষ আয়োজনে তার জন্মদিন উদযাপন করবেন।

এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। ২০২৩ সালে রাশিয়ার মিখাইল পিচুগিনকে ওখোৎস্ক সাগরে দুই মাস ভেসে থাকার পর উদ্ধার করা হয়েছিল। আর ২০১৪ সালে এল সালভাদরের জেলে হোসে সালভাদর আলভারেঙ্গা প্রশান্ত মহাসাগরে ১৪ মাস ধরে ভাসমান থাকার পর বেঁচে ফিরে আসেন।

সংবাদটি আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ