ত্রিপুরার রাজপরিবারের সদস্য ও তিপ্রা মোথা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোত কিশোর মানিক্য দেববর্মা ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন।
তিনি এই বক্তব্যকে ‘ভারতের জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে কূটনৈতিক ও কৌশলগতভাবে দৃঢ় প্রতিক্রিয়া জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস চীনে এক আলোচনায় বলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে ল্যান্ডলকড (স্থলবেষ্টিত)। সমুদ্রের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের কোনো উপায় নেই। আমরাই এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।
এই মন্তব্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও প্ররোচনামূলক বলে উল্লেখ করে প্রদ্যোত দেববর্মা বলেন, এটি শুধু একটি বক্তব্য নয়, বরং ভারতের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ। ভারত যদি এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয় থাকে, তাহলে এমন বক্তব্য বাড়তেই থাকবে। আমাদের ট্রাম্প বা পুতিনের মতো শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক পরিচালনা করতে হবে।
প্রদ্যোত দেববর্মা টিপ্রাসা (ত্রিপুরার আদিবাসী) সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বলেন,
“এই ধরনের হুমকিকে কখনই হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। আমরা তিপ্রাসা (ত্রিপুরার আদিবাসী সম্প্রদায়) জনগণ প্রস্তুত। বাংলাদেশে আমাদের অনেক সহযোগীও আছেন। আমাদের বাংলাদেশি আদিবাসী ভাই-বোনরা আমাদের সঙ্গে আছে। ভারত সরকার যদি নির্দেশ দেয়, আমরা রুখে দাঁড়াব। শুধু নির্দেশ দিন।”
উত্তর-পূর্ব ভারতের কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেনস নেক’ করিডোরের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন প্রদ্যোত দেববর্মা। তিনি সতর্ক করে বলেন, ড. ইউনূসের এই বক্তব্য শুধু অর্থনৈতিক ইস্যু নয়, বরং এটি একটি ভূরাজনৈতিক হুমকি। চীন যদি বাংলাদেশে তার প্রভাব বাড়ায়, তাহলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। এটি কোনো সাধারণ বিষয় নয়, ভারত সরকারকে কঠোর ও দূরদর্শী পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রদ্যোত দেববর্মা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক নীতিকেও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের নীতিতে কোনো বড় পরিবর্তন আসেনি। শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সঙ্গে আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক থাকলেও শুধু এই সম্পর্কের ওপর ভরসা করে চলা যায় না।
ত্রিপুরার এই রাজনীতিকের দাবি, বাংলাদেশে বসবাসরত আদিবাসী চাকমা, মণিপুরি, গারো ও খাসি সম্প্রদায়ের মানুষরাও অসন্তুষ্ট। ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে যা ঘটেছে, তা ইতিহাস ভুলে যায়নি। আজও সেখানে আমাদের আদিবাসী ভাইবোনদের ওপর নানা বৈষম্য চলছে। অথচ ড. ইউনূস এমন প্ররোচনামূলক বক্তব্য দিচ্ছেন।
সম্পাদক : হালিমা খাতুন, নির্বাহী সম্পাদক : মুন্সি মোঃ আল ইমরান। MAA 23 Multimedia Limited এর পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১, মুঠোফোন : ০১৮১৭-৫৩০৯৫২, ০১৯৭৯-৭৯৯১৪৬। ইমেইল : dailybartomandeshsangbad@gmail.com
© All rights reserved © Maa 23 Multimedia Limited