বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় আগামী জুন মাসে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় হতে পারে। তবে এই অর্থ পেতে হলে বাংলাদেশকে পূরণ করতে হবে বেশ কিছু কড়াকড়িভাবে আরোপিত শর্ত, যার মধ্যে অন্যতম হলো—রাজস্ব আয় বাড়াতে সব ধরনের কর ছাড় বাতিল।
চলতি এপ্রিল মাসের শুরুতে আইএমএফের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসে। অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো দেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে তারা একাধিক বৈঠক করে। সফরের শেষ দিনে—১৭ এপ্রিল—বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করে তারা।
বৈঠক শেষে আইএমএফ প্রতিনিধি দল জানায়, আগামী জুনে ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড় হতে পারে, তবে এর জন্য সরকারকে কর অব্যাহতির মতো সুবিধাগুলো হ্রাস কিংবা বাতিল করতে হবে। তাদের মতে, কর আদায়ে গতি না আনলে রাজস্ব ঘাটতি মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
অন্যদিকে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নতি এবং বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হারের বাস্তবায়নে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। মূল্যস্ফীতির হার কমতির দিকে থাকাও আইএমএফের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক অগ্রগতি।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রথম কিস্তির অর্থ ছাড়ের মাধ্যমে শুরু হয় এই ঋণ কর্মসূচি। এর আওতায় মোট সাত কিস্তিতে বাংলাদেশকে মোট ৪৭০ কোটি ডলার দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রথম তিনটি কিস্তিতে কিছুটা নমনীয়তা দেখালেও চতুর্থ রিভিউ মিশনে এসে আইএমএফ বেশ কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেছে।
এবারের শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে—
• রাজস্ব আহরণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো
• বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক রাখা
• নেট রিজার্ভ সংরক্ষণে অঙ্গীকার রক্ষা
এছাড়া, কাঠামোগত অর্থনৈতিক সংস্কার, অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উন্নয়নেও জোর দিচ্ছে সংস্থাটি।