বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
জরুরী বিজ্ঞপ্তি
দৈনিক বর্তমান দেশ সংবাদ এ সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১,  মুঠোফোন :  ০১৮১৭-৫৩০৯৫২।

শাল্লায় কৃষকরা বোরো ধান কাটার মহোৎসব

  • আপডেট এর সময় : বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৩ বার পঠিত হয়েছে

চিন্ময় দাশ: শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

ভাটি অঞ্চলের একমাত্র সোনালী স্বপ্ন বোরো ধান কাটার মহোৎসব চলছে। শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ কৃষক-কৃষাণীরা চরম উৎসাহ-উদ্দীপনায় ধান কেটে, মাড়াই করার পর খলায় শুকিয়ে গোলায় তুলতে ব্যস্ত। এবার চাহিদার চেয়ে ধানের ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা আনন্দিত। তারপরও কিছুটা দুশ্চিন্তা রয়েছে কৃষকের মনে। কখন প্রকৃতি তার ভয়াবহ রূপের প্রভাবে মুহুর্তেই সোনালী স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে যায়।

তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক জরুরি বার্তা ছিল, ১৫-২১ এপ্রিল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর ফলে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য হাওরের জমিতে ৮০ ভাগ ধান পাকলেই দ্রুত কাটতে কৃষকদের অনুরোধ জানানো হয়। এই প্রতিকূলতা পেরিয়ে গত কয়েক দিনের রোদের ঝিলিকে ফুটে উঠে কৃষকের মুখে হাসি।

কৃষি অফিসের তথ্যানুসারে, শাল্লা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে হাওর-১৭৯৯৯ হেক্টর ও নন হাওর ৩৭০০ হেক্টর সবমিলিয়ে-২১৬৯৯ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা-১৪৩৩৬৭ মেট্রিক টন। এর থেকে চাল পাওয়া যাবে-৯৫৫৭৮ মেট্রিক টন। টাকার অংকে দাঁড়ায় ৫১৬ কোটি টাকা। ধান কর্তনে বহিরাগত সহ কম্বাইন হারভেস্টার ৮৭ টি এবং রিপার মেশিন ৬০ টি ব্যবহৃত হচ্ছে। আবার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নিয়মিত-অনিয়মিত ও বহিরাগত শ্রমিক কাজ করছে ২১১২০ জন। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হাওরে ধান কর্তন হয়েছে  ৬০ ভাগ।

বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন করে কৃষকদের কাছ থেকে জানাযায়, এইবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। দিনের অবস্থা ভাল থাকায় সহজে ধান কেটে শুকিয়ে গোলায় তুলতে পারতাছি। আর ১০-১২ দিন আবহাওয়া ভাল থাকলে নির্বিঘ্নে সম্পূর্ণ ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হবে এবং চাহিদার চেয়ে বেশি ধান পাওয়া যাবে। অন্যান্য বছর শ্রমিক দিয়ে বেশি ধান কাটা হতো কিন্তু এইবার মেশিন দিয়ে বেশিরভাগ ধান কাটা হচ্ছে। এতে আমাদের আর্থিকভাবে লাভ হচ্ছে। তবে ট্যাংকি (কম্বাইন) মেশিনের মাধ্যমে গোখাদ্য বনের (খের) কিছুটা ক্ষতি হয়। যদি সরকার ধানের পর্যাপ্ত পরিমাণ মূল্য দেয় তাহলে কৃষক প্রচুর লাভবান হবে।

শাল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী রিপন মাহমুদ বলেন, নদীতে পানির চাপ এখনো তেমন নাই বাঁধগুলোও যথেষ্ট টেকসই। ভারী বৃষ্টি হলে দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌকত জামিল জানান, ধান কাটায় কৃষি অফিসের সবাই প্রতিনিয়ত হাওরে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। আমি ও আমাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষকদের মনোবল ও সাহস যোগাচ্ছি। কৃষকদের যে কোন প্রয়োজনে সার্বক্ষণিক আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়াস চন্দ্র দাস বলেন, এই এলাকার একমাত্র ফসল বোরো ধান। আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের ফসল উত্তোলনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

সংবাদটি আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ