কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ে নির্মম জঙ্গি হামলার পর পুরো ভারতজুড়ে শোক ও ক্ষোভের ছায়া। নিহত ২৬ জনের স্মরণে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিহারের মধুবনিতে এক জনসভায় দাঁড়িয়ে জঙ্গিদের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, "জঙ্গি এবং তাদের মদতদাতাদের পৃথিবীর শেষ প্রান্ত থেকেও খুঁজে বের করে কল্পনাতীত শাস্তি দেওয়া হবে।"
জনসভার শুরুতেই মোদী নিহতদের উদ্দেশে দুই মিনিট নীরবতা পালন করেন। এরপর তিনি বলেন, “২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে যারা হামলা চালিয়েছে, তারা শুধু নিরীহ পর্যটকদের ওপর নয়— ভারতের আত্মার ওপর হামলা করেছে।” তিনি বলেন, নিহতদের মধ্যে কেউ বাংলায়, কেউ ওড়িয়ায় কথা বলতেন, কেউ ছিলেন গুজরাটের, কেউ বিহারের। অর্থাৎ, এ হামলা কেবল এক অঞ্চলের নয়, সমগ্র ভারতের বিরুদ্ধে।
ভারতের পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক। যদিও প্রধানমন্ত্রী মোদী সরাসরি পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করেননি, তবে ইঙ্গিত স্পষ্ট। জঙ্গিগোষ্ঠী ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)— যেটি পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা— হামলার দায় স্বীকার করেছে।
হামলার পর ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ভারত পানিচুক্তি স্থগিত করেছে, সীমান্ত বন্ধ করেছে এবং পাকিস্তানি দূতাবাসের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাদের অবাঞ্ছিত ব্যক্তি ঘোষণা করে এক সপ্তাহের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এটিকে "জলযুদ্ধ" আখ্যা দিয়ে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
হামলার পরপরই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে। এতে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংসহ বিরোধী দলের নেতারাও। মোদী সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এ ধরনের হামলার বিরুদ্ধে ভারত কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে এবং অভিযুক্তদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
পহেলগাঁওয়ের হামলা শুধু প্রাণহানিই ঘটায়নি, কাশ্মীরের পর্যটননির্ভর অর্থনীতিকেও অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে। রক্তাক্ত ওই দিনটির পর স্থানীয় পর্যটনশিল্পের ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, এত কঠোর নিরাপত্তার মাঝেও কীভাবে এমন ভয়াবহ হামলা সম্ভব হলো?
সম্পাদক : হালিমা খাতুন, নির্বাহী সম্পাদক : মুন্সি মোঃ আল ইমরান। MAA 23 Multimedia Limited এর পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১, মুঠোফোন : ০১৮১৭-৫৩০৯৫২, ০১৯৭৯-৭৯৯১৪৬। ইমেইল : dailybartomandeshsangbad@gmail.com
© All rights reserved © Maa 23 Multimedia Limited