সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ০৮:০১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
শরণখোলায় নদীতে গোসল করতে গিয়ে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু  কোটালীপাড়ায় প্রায় দুই যুগ পর বিএনপির দ্বি বার্ষিকী সম্মেলন তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা কোটালীপাড়ায় দীর্ঘ বছরের বন্ধ থাকা সড়কের কাজ শেষের পথে থাকায় জনগণ সন্তুষ্ট। ৮২ কেজি গাঁজা রাজধানীর ধোলাইপাড়ে র‌্যাব-১০ কর্তৃক উদ্ধার ও পিকআপসহ ০৪ জন আটক শিবগঞ্জে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল ও খাবার বিতরণ সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে ভেসে যাচ্ছিল হরিণ শাবক শরণখোলার রিং বাধ গতকাল বৃষ্টিতে ভেঙে গেছে ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের মূল্যায়ন সভা অনুষ্ঠিত  আসিয়ান অল-স্টারসের বিপক্ষেও জয়ের দেখা পেলো না ম্যানইউ
জরুরী বিজ্ঞপ্তি
দৈনিক বর্তমান দেশ সংবাদ এ সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১,  মুঠোফোন :  ০১৮১৭-৫৩০৯৫২।

জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হবে না সেনাবাহিনী

  • আপডেট এর সময় : সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫
  • ১৩ বার পঠিত হয়েছে

করিডোর ইস্যু ও সীমান্ত নিরাপত্তা ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে—জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, এমন কোনো কার্যক্রমে সেনাবাহিনী কখনোই সম্পৃক্ত হবে না। সরকার ও সেনাবাহিনী একে অপরের সহযোগিতায় দেশ ও জাতির স্বার্থে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বলেও আশ্বস্ত করেছে সেনাসদর।

ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত একাধিক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেন সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উল-দৌলা এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এ সময় করিডোর, কেএনএফ, সীমান্ত পরিস্থিতি এবং যৌথ অভিযানসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।

সোমবার (২৬ মে) ঢাকায় সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে করিডোর ইস্যুতে সেনাবাহিনীর অবস্থান পরিষ্কার করে বলা হয়, এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি বিষয়। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সেনাবাহিনী সবসময় কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। এই বিষয়ে সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভেদ কিংবা মতপার্থক্য নেই। বরং, তারা ‘ওতপ্রোতভাবে একে অপরের সম্পূরক হিসেবে’ কাজ করছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম-উল-দৌলা বলেন, “এই দেশ আমাদের সবার। সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সেনাবাহিনী কোনো আপস করে না। করিডোর ও বর্ডার পরিস্থিতি দুটি ভিন্ন বিষয়, এদের একসঙ্গে মেশানো অনুচিত।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চট্টগ্রামের এক পোশাক কারখানায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর নামে প্রায় ৩০ হাজার ইউনিফর্ম পাওয়ার ঘটনায় সেনাবাহিনী গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তদন্ত চলছে—এই পোশাক কাদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল এবং এর সঙ্গে অন্য কোনো সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম-উল-দৌলা বলেন, “বম কমিউনিটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। সেক্ষেত্রে ৩০ হাজার ইউনিফর্ম কারা ব্যবহার করবে, তা খতিয়ে দেখার সুযোগ আছে। বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়া হচ্ছে না, বরং জাতীয় নিরাপত্তার অংশ হিসেবে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সেনা কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে রাখাইন অঞ্চলের প্রায় ৮৫-৯০ শতাংশই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। মিয়ানমারে কার্যত কেন্দ্রীয় সরকারের অস্তিত্ব বিলীন। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তে সশস্ত্র গোষ্ঠীর মুভমেন্ট অস্বাভাবিক নয়, তবে বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম-উল-দৌলা বলেন, “আমরা বর্ডার কম্প্রোমাইজ করিনি, করবও না। যতক্ষণ শরীরে শক্তি থাকবে, আমরা দেশের সীমানা রক্ষা করব। এই দেশ আমাদের সকলের।”

সীমান্তে আরসা বাহিনীর টহল নিয়ে তিনি বলেন, “অবশ্যই এটি উদ্বেগজনক। তবে আমরা সতর্ক এবং বিজিবি ও সেনাবাহিনী একযোগে কাজ করছে। পুশইন কোনোভাবেই কাম্য নয়, প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনী সরাসরি মাঠে নামবে।”

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ৪০ দিনে সেনাবাহিনী ২৪১টি অবৈধ অস্ত্র এবং ৭০৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৬১১টি অবৈধ অস্ত্র এবং ২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। একই সময়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১৪ হাজার ২৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী জানায়, মাদকবিরোধী অভিযানে আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৪০০ জন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজ, অপহরণকারী ও ডাকাতও রয়েছে।

ভেজাল খাদ্যবিরোধী অভিযানে সেনাবাহিনী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে চিংড়িতে জেলি মেশানো এবং ভেজাল শিশু খাদ্য উৎপাদনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এসব অভিযানের ফলে জনগণের মধ্যে স্বস্তি ও আস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন সেনা কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সেনা কর্মকর্তারা আরও বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করবে”—এমন গুজব সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো আলোচনাও হয়নি। তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে দেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সেনাবাহিনী দুই সপ্তাহব্যাপী বিশেষ নিরাপত্তা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় টহল ও চেকপোস্ট বসানো হবে, যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করা হবে।

সংবাদটি আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ