বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ০১:৩১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
জরুরী বিজ্ঞপ্তি
দৈনিক বর্তমান দেশ সংবাদ এ সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১,  মুঠোফোন :  ০১৮১৭-৫৩০৯৫২।

রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতির ভিত্তিতেই হবে জাতীয় সনদ: আলী রীয়াজ

  • আপডেট এর সময় : মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫
  • ৫ বার পঠিত হয়েছে

জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই সংলাপের দ্বিতীয় পর্বে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ স্পষ্ট করে বলেছেন—কমিশনের নিজস্ব প্রস্তাব নয়, বরং রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই তৈরি হবে ‘জাতীয় সনদ’। এই সনদের লক্ষ্য হলো ন্যূনতম ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাজনৈতিক সংস্কার নিশ্চিত করা।

মঙ্গলবার (৩ জুন), রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির দোয়েল হলে ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, “আমাদের সময় সীমিত। তাই আমরা চাই জুলাই মাসের মধ্যেই একটি কাঠামোবদ্ধ জাতীয় সনদ প্রণয়ন করতে।”

তিনি আরও বলেন, “সব প্রস্তাবে একমত হওয়া যাবে না। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেগুলোই জাতীয় সনদে থাকবে। আর যেসব বিষয়ে একমত হওয়া যাবে না, সেগুলো আলাদাভাবে উল্লেখ থাকবে— ‘আলোচিত হলেও ঐকমত্য হয়নি’। বাকিগুলো রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ইশতেহারে রাখতে পারে।”

এই বৈঠকে আলোচনার প্রধান বিষয়গুলো ছিল:

• সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ (দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা)

• সংসদে নারীদের সংরক্ষিত আসন

• সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও তার নেতৃত্ব কাঠামো

• তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ও কার্যপরিধি

আলী রীয়াজ জানান, সংস্কার কমিশনের প্রাথমিক প্রস্তাবগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে পরিবর্তিত হয়েছে। এই পরিবর্তিত কাঠামোর আলোকে আলোচনা এগোচ্ছে এবং চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে জাতীয় সনদে।

বৈঠকে অংশ নেয় বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণসংহতি আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), লেবার পার্টি, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দল।

বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা মনে করি ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব। তার আগে জরুরি কিছু সংস্কার বাস্তবায়ন করা দরকার, যেগুলো ঐকমত্যের ভিত্তিতে এক মাসেই করা সম্ভব।”

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “নির্বাচন হলে সেটা ফেব্রুয়ারির মধ্যে হওয়া উচিত। কারণ রমজানের আগে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়াই যৌক্তিক। দেরি হলে এপ্রিলের পরে নির্বাচন যাওয়া উচিত হবে না।”

এছাড়া এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই সনদের পরেই জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা উচিত।”

আলী রীয়াজ জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ের এই সংলাপ ঈদের আগ পর্যন্ত চলবে না। ঈদের ছুটির পর আলোচনা পুনরায় শুরু হবে। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিটি বিষয়ে সম্মিলিত আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে চাই, যাতে পারস্পরিক যুক্তি-বিশ্লেষণ এবং অবস্থান বিনিময়ের সুযোগ থাকে।”

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

আলোচনার মূল লক্ষ্য হিসেবে আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা চাই এমন কিছু ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে, যেখানে সব রাজনৈতিক দল ন্যূনতম ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে এবং সেগুলো সংরক্ষিত থাকে। সেই ভিত্তিতেই ‘জুলাই সনদ’ তৈরি হবে।”

সংবাদটি আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ