মোঃ কামরুল ইসলাম টিটু:স্টাফ রিপোর্টার:
শরণখোলা উপজেলা বিএনপির কমিটির নির্বাচন নিয়ে বিরোধ তুঙ্গে
সরাসরি ভোটে কমিটি গঠনের আগেই বিরোধে জড়িয়েছেন বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ভোটার তালিকা প্রণয়ন, আধিপাত্য বিস্তারসহ নানা বিষয়ে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে একাধিকবার পিছিয়েছে নির্বাচনের তারিখ। সর্বশেষ ১৩ জুলাই নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা হয়েছে। নির্বাচনে চার ইউনিয়ন থেকে ৭১ জন করে মোট ২৮৪ জনপ্রতিনিধি তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখানকার বিএনপির রাজনীতি কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত। এর মধ্যে সহ-সভাপতি মোল্লা ইসহাক আলী ও তার ভাষ্য মতে, সাবেক সভাপতি মতিয়ার রহমান ও সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন পঞ্চায়েত ৩টি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন।এছাড়াও দ্বিতীয়, তৃতীয় সারির নেতাদের মধ্যে কয়েকটি উপ-গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়। তবে নেতা কর্মীদের অভিযোগ, মূল দ্বন্দটি চলছে সাবেক সভাপতি মতিয়ার রহমান ও আনোয়ার হোসেন পঞ্চায়েতের মধ্যে। বিএনপিকে চমক দেখাতে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন মতিয়ার রহমানের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগম। আঞ্জুমান আরা বেগম এবং আনোয়ার হোসেন পঞ্চায়েত উভয়ই আগামী কমিটির সভাপতি প্রার্থী। এদিকে পঞ্চায়েত গ্রুপের অনুসারীরা ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণ ও আঞ্জুমান আরা বেগমের অনুসারীদের ভোটার বানানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছেন। যদিও আগামী ২৮ তারিখে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর সব পক্ষই নমিনেশন পেপার ক্রয় করেছেন। নির্বাচন মনিটরিং কমিটি সূত্রে জানা গেছে, সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগাঠনিক সম্পাদক এই তিনটি পদে সরাসরি ভোট হবে । সভাপতি পদে নমিনেশন পেপার ক্রয় করেছেন তিনজন, সাধারণ সম্পাদক পদে ছয়জন ও সাংগাঠনিক সম্পাদক পদে আটজন। সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন আঞ্জুমান আরা বেগম, আনোয়ার হোসেন পঞ্চায়েত ও মোস্তফা কামাল । সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুস সবুর আকন, বেল্লাল হোসেন মিলন, কালাম ফরেস্টার, শিমুল গাজী , ফরিদ উদ্দিন মানিক ও মোল্লা ইসহাক আলী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। অন্যদিকে সাংগাঠনিক সম্পাদক পদে মহিউদ্দিন হাওলাদার বাদল, মিজানুর রহমান, কাওসার হোসেন, মনিরুজ্জামান হাওলাদার, ইলিয়াছ, মধু তালুকদার, শামিম আহম্মেদ ও শহিদুল ইসলাম লিটন। সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী মোল্লা মিজানুর রহমান বলেন, একমাত্র আমি হাসিনার রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে তার ডামি নির্বাচন গুলোর বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে জনগনকে সচেতন করে নির্বাচন বয়কটের লিফলেট বিতরন করেছি। বিএনপির প্রত্যেকটি কর্মীর সাথে রাজপথে রক্ত ঝড়িয়েছি। দূর্দিনে মামলা হামলায় দল ও কর্মী বাঁচাতে জীবনের সর্বস্ব ত্যাগ স্বীকার করেছি। কর্মী ও ভোটাররা তারুন্যের অহংকার মোল্লা মিজানুর রহমানকে শতভাগ ভোটে বিজয়ী করতে, ভোটযুদ্ধ করবে বলে জানিয়েছেন তার সমর্থকরা। সাধারন সম্পাদক মোল্লা ইসহাক আলী বলেন, দলে আমার যত অবদান তাতে ভোটাররা আমাকেই নির্বাচিত করবে বলে আমি আশাবাদি। ভোটবিহীন কোন কুচক্রী মহলকে ভোটাররা ভোট দিবেনা বলে আমি বিশ্বাস করি। সাধারন সম্পাদক পদ-প্রার্থী ফরিদ উদ্দিন মানিক জানান, সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে দলীয় নেতাকর্মীরা আমারপক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছে। আমাকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া করছে। আমি বিজয়ী হলে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দলীয় কর্মকান্ডকে আরো বেগবান করবো। সাধারন সম্পাদক পদ-প্রার্থী বেল্লাল হোসেন মিলন বলেন, আমি নির্বাচিত হলে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দখলবাজ, মাদক নির্মূলের পাশাপাশি তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করবো। এদিকে সভাপতি পদ প্রার্থী সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোস্তফা কামাল বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে দাবি করেন। আর আঞ্জুমান আরা কখনোই দলীয় কোন কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না তাই তার মনোনয়ন পত্র বাতিলের দাবি জানান মেজর মোস্তফা কামাল।এ ব্যাপারে সভাপতি পদ প্রার্থী আঞ্জুমান আরা বলেন, আমি বিএনপির প্রতিষ্ঠার পর বীরেরসন্তান, তাই আমার প্রার্থী হওয়ার অধিকার আছে। জানতে চাইলে বাগেরহাট-৪ সংসদীয় নির্বাচনী আসনের শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে নির্বাচন পরিচালনা ও মনিটরিং কমিটির প্রধান খাদেম নেয়া মুলনাসির আলাপ বলেন, প্রার্থীদের আবেদনের কারনে নির্বাচন কিছুটা বিলম্ব করা হয়েছে। সর্বোপরি নির্বাচন স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।