সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
বেগম জিয়ার উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়ার সাথে ফুলবাড়ীতে বিএনপির মতবিনিময় অনুষ্ঠিত ইসলামপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার বিক্ষোভ সমাবেশ ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও কেওক্রাডং বাংলাদেশ এর উদ্যোগে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে হলো ‘কোস্টাল ক্লিনআপ’ শুটিংয়ে আপত্তিকর আলোচনা, নির্মাতার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা অভিনেত্রীর সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত আয়করের ভীতি : সঠিক তথ্য পেতে হিমশিম অর্থনৈতিক শুমারির মাঠকর্মীদের চারঘাটের কৃষি উদ্যোক্তা হানিফ মাল্টা ও বেদেনা চাষে সফল, তৈরি করতে চান এগ্রোপার্ক বাজে ব্যাটিংয়ে ভারতের কাছে ফাইনালে হার বাংলাদেশের শেখ হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু বাকৃবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ৬ জানুয়ারি
জরুরী বিজ্ঞপ্তি
দৈনিক বর্তমান দেশ সংবাদ এ সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১,  মুঠোফোন : ০১৭১২-৫২২৫৩৭, ০১৮১৭-৫৩০৯৫২।

শেষ যুগে যেভাবে চলতে বলেছেন নবীজি (সা.)

  • আপডেট এর সময় : রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১১ বার পঠিত হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: সময় যত কেয়ামতের দিকে ঘনিয়ে যাবে, ততই ফিতনা বেড়ে যাবে। ঈমান ও ইসলামের ওপর টিকে থাকা তখন সবার পক্ষে সহজ হবে না। এমন কঠিন সময়ে হাদিসের নির্দেশনা হলো- নিজেকে নেক আমলে ব্যস্ত রাখা এবং একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরের পরিবেশে না যাওয়া। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, অচিরেই এমন ফিতনার আত্মপ্রকাশ হবে, বসে থাকা ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি থেকে উত্তম হবে। আর দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি চলমান ব্যক্তি থেকে উত্তম হবে। আর চলমান ব্যক্তি দ্রুতগামী ব্যক্তি থেকে ভালো থাকবে। (মুসলিম : ৭১৩৯)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘ফিতনার সময় ঈমানদারের করণীয় হলো- সর্বদা চুপ থাকা। এত পরিমাণ চুপ থাকা, যার কারণে কোনো ফিতনা তাকে আকৃষ্ট করতে না পারে। (আল ফিতান : ৭৩৫)। হাদিসে আরো বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি ফিতনার দিকে তাকাবে, ফিতনা তাকে ঘিরে ধরবে। তখন কেউ যদি কোনো আশ্রয়ের জায়গা কিংবা নিরাপদ জায়গা পায়, তাহলে সে যেন আত্মরক্ষা করে। (বোখারি : ৭০৮১)

এ ছাড়া আল্লাহর কাছে অধিক পরিমাণে দোয়া করা উচিত। হুজাইফা (রা.) বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, মানুষের ওপর এমন একটা যুগ আসবে যখন কেউ রক্ষা পাবে না, সে ছাড়া যে দোয়া করছে, ডুবন্ত মানুষের দোয়ার মতো। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা : ৩৬৪৪৭)

অর্থাৎ নদীতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তি যেভাবে বাঁচার আকুতি নিয়ে দোয়া করতে থাকে, সেভাবে দোয়া করা। পাশাপাশি নিজের নজরের হেফাজত করা। ফিতনার বিষয় সম্পর্কে জানতেও বের না হওয়া। ফিতনার দিকে দৃষ্টি বা উঁকি না দেওয়া। সবসময় সৎ কাজ আঁকড়ে ধরা, অসৎ কাজ পরিহার করা, সর্বসাধারণকে এড়িয়ে মুত্তাকিদের সঙ্গে চলাফেরা করা এবং পাপাচারীদের সঙ্গ ত্যাগ করা ফিতনাকালীন গুরুত্বপূর্ণ আমল।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন ফিতনা তীব্র আকার ধারণ করবে, তখন তোমরা সৎ কাজকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরবে এবং অসৎ কাজ হতে বিরত থাকবে। তোমাদের মাঝে বিশেষ লোক যারা রয়েছে, তাদের প্রতি মনোনিবেশ করবে এবং সর্বসাধারণকে এড়িয়ে চলবে। (আল ফিতান : ৭২১)

হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, ফিতনার যুগে কেউ যদি জান্নাতের উপযুক্ত হতে চায়, তার জন্য বিশেষ তিনটি করণীয় রয়েছে। হজরত উকবা ইবনে আমির (রা.) বলেন, একদা আমি রাসুলুল্লাহর (সা.) সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং বললাম, সেসময় নাজাতের উপায় কী? তিনি বললেন, নিজের জিহ্বা আয়ত্তে রাখবে, নিজের ঘরে পড়ে থাকবে এবং নিজের পাপের জন্য রোদন করবে। (মিশকাত : ৪৮৩৭)

সর্বযুগের অন্যতম বড় ফিতনা হচ্ছে নারীর ফিতনা। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো নারীর ওপর তোমার দৃষ্টি পড়লে তার প্রতি বারবার দৃষ্টিপাত করো না; বরং দৃষ্টি অতিসত্বর ফিরিয়ে নিও। কারণ তোমার জন্য প্রথমবার ক্ষমা, দ্বিতীয়বার নয়। (মুসনাদে আহমদ : ১৩৬৯)। নবীজি (সা.) আরো বলেছেন, পুরুষের জন্য নারী জাতি অপেক্ষা অধিক ক্ষতিকর কোনো ফিত?না আমি রেখে যাইনি। (বোখারি : ৫০৯৬)

এ উম্মতের আরো একটি বড় ফিতনা হচ্ছে- ধন-সম্পদের ফিতনা, যা আল্লাহর আনুগত্য থেকে মানুষকে গাফেল রাখে। হজরত কাব ইবনে ইয়াজ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোনো না কোনো ফিতনা ছিল। আর আমার উম্মতের ফিতনা হলো ধন-সম্পদ। (তিরমিজি : ২৩৩৬)

ফিতনার যুগে গুরুত্বপূর্ণ অবলম্বন হচ্ছে কোরআন-সুন্নাহ আঁকড়ে ধরা, যা না থাকলে যেকোনো সময় ফিতনা গ্রাস করে ফেলতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় আমি তোমাদের মাঝে এমন বস্তু রেখে যাচ্ছি, তোমরা যদি তা আঁকড়ে ধরে থাকো, তবে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না। আর তা হলো আল্লাহর কিতাব ও নবীর সুন্নত।’ (আত-তারগিব ওয়াত তাহরিব : ৪০)

দুনিয়াবি শাস্তি থেকে বাঁচতে করণীয় : পাপ সবসময় বর্জনীয়। পাপের চূড়ান্ত শাস্তি আখেরাতে হলেও অনেক সময় দুনিয়াতেও আল্লাহতায়ালা শাস্তি দিয়ে থাকেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, কোনো জাতির মধ্যে আত্মসাৎ বৃদ্ধি পেলে সে জাতির লোকদের অন্তরে ভয়ের সঞ্চার করা হয়। কোনো জাতির মধ্যে ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়লে সেখানে মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পায়। কোনো সম্প্রদায়ের লোকরা পরিমাপ ও ওজনে কম দিলে তাদের রিজিক সংকুচিত করা হয়। কোনো জাতির লোকরা অন্যায়ভাবে বিচার-ফয়সালা করলে তাদের মধ্যে রক্তপাত বিস্তৃতি লাভ করে। কোনো জাতি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে আল্লাহ তাদের ওপর শত্রুদল চাপিয়ে দেন।’ (মুয়াত্তা মালেক : ১৩২৩)

আল্লাহর দেওয়া দুনিয়াবি শাস্তির ধরন নানারকম হয়ে থাকে। কারো অসুস্থতার মাধ্যমে, কাউকে অসহায়ত্বের মাধ্যমে, কারো আবার ঈমান হরণের মাধ্যমে। গুনাহের প্রথম শাস্তি হলো মানসিক অস্থিরতা। এরপর নানা আপদে পতিত হতে হয় পাপিকে।

প্রথম শাস্তি মানসিক অশান্তি বড় এক আপদ। এই আপদ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো তওবা ও নেক আমল। এ ছাড়া প্রশান্তির কোনো উপায় নেই। এ মহা নেয়ামত আল্লাহতায়ালা তার রাসুলকে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, আমি কি আপনার অন্তর প্রশান্ত করিনি? (সুরা ইনশিরাহ : ১)

আল্লাহতায়ালা মুসলিম উম্মাহকে কঠিন ফিতনার দিনে ঈমান ঠিক রাখার তাওফিক দান করুন। দুনিয়াবি শাস্তি থেকে বাঁচতে হাদিসের নির্দেশনা যথাযথ আমল করারও তাওফিক দিন। আমিন।

সংবাদটি আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ