নিজস্ব প্রতিনিধি: পরিবারের চাপে পড়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনেক কাজই করতে হয়। এমনকি লেখাপড়া বা পেশা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও কাউকে কাউকে পরিবারের চাপের কাছে নতিস্বীকার করতে হয়, বিসর্জন দিতে হয় নিজের ইচ্ছা ও স্বপ্নের। কিন্তু পারিবারিক ব্যবসায় থাকবেন না বলে ভারতের এক ব্যক্তি যে কাণ্ড করেছেন, তা শুনে যে কারও গা শিউরে উঠতে পারে। ৩২ বছরের ওই ব্যক্তির নাম ময়ূর তারাপারা। ময়ূরের পরিবারের হীরার ব্যবসা আছে। ভারতের গুজরাট রাজ্যের সবচেয়ে বড় শহর সুরাটে তাদের হীরার দোকান ‘অনভ জেমস’।
পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে ময়ূর একজন কম্পিউটার অপারেট হিসেবে কাজ করছিলেন। যে কাজ তাঁর একেবারেই পছন্দ ছিল না; কিন্তু সাহস করে পরিবারকে এ কথা তিনি বলে উঠতে পারছিলেন না। এই টানাপোড়েনে ক্লান্ত ময়ূর কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করা থেকে বাঁচতে ভয়ংকর এক পরিকল্পনা করেন। তিনি নিজেই একটি ছুরি দিয়ে তাঁর বা হাতের চারটি আঙুল কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। শুরুতে নিজের এ কাণ্ডের কথা লুকিয়ে গিয়েছিলেন ময়ূর।
পুলিশকে বলেছিলেন, সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় তিনি হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। জ্ঞান ফেরার পর দেখতে পান, তাঁর বাঁ হাতের চারটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ময়ূর দাবি করেন, ৮ ডিসেম্বর তাঁর সঙ্গে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তাঁর এই গল্পে সন্তুষ্ট হতে পারেনি পুলিশ। তারা সিসিটিভি ফুটেজ ঘাঁটতে শুরু করেন। এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্যপ্রমাণও খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে থাকেন।
পুলিশের খোঁজাখুঁজিতে বেরিয়ে আসে অন্য এক ঘটনা। পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ ঘেঁটে দেখতে পায়, ময়ূর একটি ছুরি কিনেছেন। পরে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, তিনি নিজেই এ কাণ্ড করেছেন। ৮ ডিসেম্বর রাতে একটি দড়ি দিয়ে নিজের হাতের কবজি বেঁধে তিনি নিজেই ছুরি দিয়ে হাতের আঙুল বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। পরে তাঁর বন্ধুরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
ময়ূরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ কাটা আঙুল এবং ছুরিটি উদ্ধার করেছে।