বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
শান্তি রক্ষায় কলাপাড়া পৌর বিএনপির বিশেষ জরুরি সভা আশুলিয়ায় ছাত্রলের সভাপতি প্রার্থী’র নেতৃত্বে শুভেচ্ছা মিছিল কলাপাড়ায় আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে নিশি রাতের অতিথি চোর চক্র কলাপাড়ায় আড়াই লাখ টাকার চোরাইমাল উদ্ধার, বিদ্যুৎ প্লান্টে চুরির অভিযোগে মামলা রায়পুরে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মডেল স্কুল চ্যাম্পিয়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাচীন পদ্ধতিতে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু লালি গুড় অব্যবহৃত ডাটা-মিনিট পরবর্তী প্যাকেজে যুক্ত করতে আইনি নোটিশ মডেল তিন্নি হত্যা মামলায় খালাস পেলেন সাবেক এমপি অভি প্রি-পেইড মিটার লাগানো বন্ধের দাবিতে ফুলবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত পলাতক আসামী কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০
জরুরী বিজ্ঞপ্তি
দৈনিক বর্তমান দেশ সংবাদ এ সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১,  মুঠোফোন : ০১৭১২-৫২২৫৩৭, ০১৮১৭-৫৩০৯৫২।

আশুলিয়ায় ভবন মালিকের স্বেচ্ছাচারিতায় অর্ধশত শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ

  • আপডেট এর সময় : রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২৪ বার পঠিত হয়েছে

সাভার উপজেলা প্রতিনিধি: ঢাকার আশুলিয়ায় ভবন মালিকের স্বেচ্ছাচারিতায় প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুল মালিক আশুলিয়া থানা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা পাননি। ফলে ওই স্কুলের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী পড়াশোনা ও পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

আশুলিয়ার পশ্চিম গুমাইল এলাকার স্বপ্নচূড়া শাফাত মেমোরিয়াল স্কুলের জমি ও ভবন মালিকের একক স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হয়ে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালে ড. রেহেনুমা খানম নামের এক নারী উদ্যোক্তা সমাজের সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের উন্নত এবং মান সম্পন্ন শিক্ষা প্রদান ও পুষ্টির কথা চিন্তা করে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম হাতে নেন হিরোজ ফর অল নামের একটি সেবামূলক সংগঠন। এরই ধারাবাহিকতায় পূর্ব থেকে পরিচিত আশুলিয়ার পশ্চিম গুমাইল এলাকার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী জয়নাব খানম ইভার মালিকানাধীন ৪ শতাংশ জমি ১৫ বছরের জন্য ইজারা (ভাড়া) হিসেবে নিয়ে সেখানে ৪ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে একতলা একটি ভবন করেন হিরোজ ফর অল কর্তৃপক্ষ। পরে সেখানে “স্বপ্নচূড়া শাফাত মেমোরিয়াল স্কুল” নামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেন এবং প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী ভর্তি করান।

পরে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারী থেকে শিক্ষা-কার্যক্রম পাঠদান চালু করেন। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত শিশু-কিশোরদেরকে শিক্ষার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার (দুধ, ডিম, কলা) প্রদান করতেন। কিন্তু শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার কিছুদিন পর থেকে ইজারাদাতা এবং তার স্বামী মিলে শিক্ষার্থীদের এবং তাদের অবিভাবকদের নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখাতে থাকেন। পরে বিষয়টি মৌখিকভাবে বার বার ইজারাদাতা জয়নাব খানম ইভাকে বলা সত্বেও তিনি তা বন্ধ করেননি। এমনকি তিনি ব্যানার খুলে ফেলে দেন এবং এক পর্যায়ে স্কুলের কেয়ারটেকার ও স্কুলের শিক্ষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেন। সেই সাথে স্কুলের ভেতরে থাকা আসবাবপত্র,  কম্পিউটার সহ সকল প্রকার শিক্ষা উপকরণ সহ স্কুলে তালা লাগিয়ে দেন। যার ফলে স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এসব ঘটনায় গেল বছরে আগস্টের ৯ তারিখ আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিবাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ওই স্কুলে শিক্ষার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার দেয়া হত শিক্ষার্থীদের। কিন্তু জমির মালিক তাদের ওই স্কুলে যেতে ভয়ভীতি দেখাতো। কিন্তু এরপরেও বাচ্চারা স্কুলে যেত। কারণ বিনামূল্যে পড়াশোনার পাশাপাশি বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার প্রদান এটা অন্য কোথাও নেই। তাই ভয়ভীতি দেখালেও সেখানে পাঠাতাম। কিন্তু ওই মহিলা স্কুলে তালা লাগিয়ে দিছে এখন স্কুল বন্ধ। গরীব মানুষ আমরা, এখন বাচ্চাদের কোথায় পড়াবো জানিনা।

স্বপ্নচূড়া শাফাত মেমোরিয়াল স্কুলের তত্ত্বাবধায়ক মুছা করিম রিপন জানান, পূর্ব পরিচিত এবং সু-সম্পর্ক থাকার কারণে গুমাইল এলাকার জয়নাবের কাছ থেকে জমি লীজ (ভাড়া) হিসেবে নিয়ে সেখানে চার তলা ফাউন্ডেশনের একটি ভবন নির্মাণ করা হয় এবং সেখানে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে শিক্ষাদান ও পুষ্টিকর খাবার প্রদানের লক্ষেই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকে জয়নাব ও তার স্বামী ভবনটি দখলে নিতে নানা কৌঁশল করতে থাকে। এনিয়ে তাকে অন্তত তিনবার লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং প্রতারণার অভিযোগে মামলাও করা হয়েছে। স্কুলটি খুলে যাতে এর কার্যক্রম শুরু করতে পারি সেজন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। তা না হলে সমাজের সুবিধা বঞ্চিত প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

জমির ইজারাদাতা জয়নাব খানম ইভার মুঠোফোনে জানান, এটা ঠিক ১৫ বছরের জন্য ভাড়া দিয়েছি। কিন্তু ভাড়া নেওয়ার পর তারা ঠিক মত ভাড়া পরিশোধ করেনি। এমনকি ১৩/১৩ মাসের ভাড়া বাকী পড়ায় তাদেরকে বের করে দিয়েছি। এছাড়া তাদেরকে বের করে দেয়ার পর আমাকে ও আমার স্বামীকে নানাভাবে হয়রানি করেছে তারা। এমনকি মামলা দিয়ে আমার স্বামীকে জেল খাটিয়েছে। হয়রানি আমরা হয়েছি তাদেরকে ভাড়া দিয়ে। তারা ভবনটি দখলের পায়তারা করেছিল বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তিনি জানান, মামলাটি হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে। এরপরেও নানাভাবে হয়রানি করছে তারা।

এবিষয়ে সাভার উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাজমুশ শিহার মুঠোফোনে জানান, স্কুলটি আমাদের এখান থেকে রেজিষ্ট্রেশন নেই। আর এব্যাপারে আমাদেরকে কেউ জানায়নি। রেজিষ্ট্রেশন থাকলে হয়তো বিষয়টি দেখা যেত।

সংবাদটি আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ