রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৮ অপরাহ্ন
জরুরী বিজ্ঞপ্তি
দৈনিক বর্তমান দেশ সংবাদ এ সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ৭৮/৪/ সি তৃতীয় তলা, কাজলা ব্রীজ-উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। ফোন ০২-২২৩৩৪২১৪১,  মুঠোফোন :  ০১৮১৭-৫৩০৯৫২।

তিস্তা বাঁচাতে জনতার দাবির ঢল

  • আপডেট এর সময় : সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২৬ বার পঠিত হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক : তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে পাঁচ জেলার মানুষের ঢল নেমেছে তিস্তা পাড়ে। ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তা রক্ষা আন্দোলনের আওতায় রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে জড়ো হয়েছে তিস্তা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায়।
সোমবার দুপুর ১টা থেকে এই কর্মসূচির মূল সমাবেশ শুরু হয় রংপুরের তিস্তা রেলসেতু চর পয়েন্টে। বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ, শিক্ষার্থী, কৃষক, মৎস্যজীবী এবং পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা এতে অংশ নেন। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির ব্যানারে দুই দিনব্যাপী এই অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া বিএনপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সংহতি জানাতে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন।
প্রতিবাদকারীরা তিস্তার বুকে মঞ্চ স্থাপন করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পদযাত্রা ও সমাবেশের মাধ্যমে তাদের দাবির পক্ষে জনমত গঠন করছেন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া এনামুল হক নামের এক জেলে বলেন, “আমার দাদার আমলে তিস্তায় সারা বছর মাছ পাওয়া যেত। এখন বর্ষায় কয়েক মাস মাছ ধরতে পারলেও বছরের বাকি সময় নদী শুকিয়ে যায়, আমাদের জীবিকা বন্ধ হয়ে যায়।” কৃষক আশিকুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বর্ষায় ভারত আমাদের তিস্তায় পানি ছেড়ে প্লাবিত করে, আর শুষ্ক মৌসুমে পানি আটকে রাখে। এতে চাষাবাদে মারাত্মক সংকট তৈরি হয়।”
বিশ্লেষকদের মতে, তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়া নিয়ে বাংলাদেশ বহু বছর ধরে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করলেও চুক্তি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। বর্ষায় অতিরিক্ত পানি প্রবাহের ফলে ভয়াবহ বন্যা হয়, আর শীতকালে পানি শূন্য হয়ে পড়ে তিস্তা। এর ফলে কৃষি, মৎস্য এবং পরিবেশের উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, “তিস্তা ব্যারেজে বর্তমানে পানির প্রবাহ মাত্র ২৮০০ কিউসেক, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। শুষ্ক মৌসুমে চুক্তি অনুযায়ী পানি পেলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় থাকত এবং কৃষি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা পেত।”
তিস্তা বাঁচানোর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা জানান, সরকার যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আরও বড় পরিসরে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। আন্দোলনকারীরা বলেন, “আমরা চাই সরকার দ্রুত ভারতের সঙ্গে কার্যকর চুক্তি করুক এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করুক, যাতে আমাদের জীবন ও জীবিকা রক্ষা পায়।”
আন্দোলনকারীদের দাবি, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে এবং নদী রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনেও কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ প্রত্যাশিত, যা সরকারের ওপর চাপে পরিণত হতে পারে।

সংবাদটি আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ