দর্শকের প্রিয় মুখ মোশাররফ করিম আবারও ফিরছেন রহস্যভেদ করতে, তবে এবার একেবারে ভিন্নধরনের গোয়েন্দা চরিত্রে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘বঙ্গ’-র জন্য নির্মিত ওয়েব ফিল্ম ‘মির্জা’-তে তাকে দেখা যাবে এক অচেনা কিন্তু মনকাড়া গোয়েন্দা রূপে, যিনি মারপিটে কাঁচা, দৌড়াতে পারেন না, বয়স পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই-তবু বুদ্ধির জোরে অপরাধীদের ঠেকাতে প্রস্তুত। তবে একটা শর্তে-তদন্তের আগে টাকা!
পরিচালনা করেছেন অভিনেতা ও নির্মাতা সুমন আনোয়ার। তিনি জানান, ‘মির্জা’ শুধুমাত্র একটি সিনেমা নয়, এটি একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রজেক্ট হিসেবে তৈরি হচ্ছে। প্রথম কিস্তির নাম ‘ক্লাব টোয়েন্টি নাইন’, যেখানে দেখানো হবে মির্জার গোয়েন্দা হয়ে ওঠার শুরুর কাহিনি। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে আসবে নতুন নতুন কিস্তি।
মির্জা চরিত্রটি প্রচলিত গোয়েন্দার প্রতিচ্ছবি নয়। তিনি খানিকটা স্থূলকায়, শারীরিকভাবে সীমিত, তবে মস্তিষ্কের তীক্ষ্নতায় সমান পারদর্শী। তার বুদ্ধি ও পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা এতটাই ধারালো যে, সীমিত উপকরণেই জটিল রহস্যের সুরাহা করতে পারেন। তার জীবনের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য-কোনো তদন্তের আগে অর্থ গ্রহণ করা, যেটি পোস্টারে উঠে এসেছে জনপ্রিয় ক্যাপশনে:
‘পরে তদন্ত, আগে টাকা, মির্জা সাহেবের হিসাব পাকা।’
অন্য একটি পোস্টারে তাকে দেখা গেছে হুমকি-ধমকির সুরে বলছেন-‘আইতাছে মির্জা, ক্রিমিনাল ভাগি যা!’
‘মির্জা’ চরিত্রে মোশাররফ করিম আবারও প্রমাণ করছেন যে, তিনি কেবল গাম্ভীর্যপূর্ণ বা নাটকীয় চরিত্রে নয়, ব্যতিক্রমী, কৌতুকাত্মক ও প্রান্তিক চরিত্রেও সমানভাবে সাবলীল। তার সর্বশেষ রিলিজ হওয়া ‘চক্কর’ সিনেমায় গোয়েন্দা কর্মকর্তা মঈনুল হিসেবে যে রহস্য-উন্মোচনের ছাপ রেখেছিলেন, এবার তা আরও রঙিন ও ব্যতিক্রমী হয়ে ধরা দেবে ‘মির্জা’-তে।
সিনেমাটিতে মোশাররফ করিম ছাড়াও অভিনয় করেছেন পারসা ইভানা, এরফান মৃধা শিবলু, তামান্না হক বর্ণা, সৌমি ও দিলরুবা দোয়েল। শুটিং হয়েছে গত বছর সেপ্টেম্বরে, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেও। নির্মাতা জানান, ওই সময় মানসম্মত একটি প্রোডাকশন চালিয়ে যাওয়া সহজ ছিল না। তবুও টিমের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সিনেমাটি আশানুরূপ হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
পরিচালক সুমন আনোয়ার বলেন,
“প্রতিটি কাজের শেষে নির্মাতা হিসেবে একটা বিশেষ অনুভূতি থাকে। ‘মির্জা’ সিনেমাটিকে ঘিরেও আমার সেই প্রত্যাশা রয়েছে। গল্প, চরিত্র, অভিনয়-সব মিলিয়ে দর্শকরা এখানে নতুন কিছু পাবেন।”
ওটিটি দর্শকদের জন্য এটি হতে পারে এক ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা। রহস্যের সঙ্গে রসবোধের সংমিশ্রণে ‘মির্জা’ সিরিজটি ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হবে বলেই প্রত্যাশা।