রাজনীতি ডেস্কঃ
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (১৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণ-অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, যারা অতীতে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছিল, তারা আবারও সক্রিয় হচ্ছে এবং ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, যত দিন যাচ্ছে, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। ফ্যাসিস্ট শক্তি আবারও জোটবদ্ধ হচ্ছে এবং গণতন্ত্রবিরোধী কার্যক্রমে সক্রিয় হচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দ্রুত আয়োজন করার কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, রাজনৈতিক সংস্কার ও নির্বাচনসংক্রান্ত প্রস্তাব বিএনপিই প্রথম দিয়েছে। তাই অযথা সময়ক্ষেপণ না করে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের রূপরেখা তৈরির তাগিদ দেন তিনি।
তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে আমাদের সামনে একটি সুযোগ এসেছে। এটি হাতছাড়া হলে দেশ অনেক বছর পিছিয়ে যাবে। প্রতিবার তরুণরা প্রাণ দিচ্ছে, আন্দোলন হচ্ছে—তাই এখনই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে জাতিকে রক্ষা করতে হবে।”
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে উঠে আসে, দেশের প্রতিটি পর্যায়ে যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের উচিত একটি এমন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করা, যা সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। সেই ভিত্তিতে সবাই মিলে দেশ গড়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, “বিএনপির কোনো সশস্ত্র বিপ্লবের চিন্তা নেই, আমাদের লক্ষ্য জনগণের সমর্থন নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। গণতন্ত্রই হোক আমাদের একমাত্র পথ।”
মির্জা ফখরুল আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনের সময় যত বিলম্বিত হচ্ছে, ততই গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি সুসংগঠিত হয়ে উঠছে। নির্বাচন দেরি হওয়ায় জনগণের মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে নতুন ধরনের অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে।
তিনি উল্লেখ করেন, দেশের সব রাজনৈতিক দলই প্রমাণ করেছে যে তারা দেশকে ভালোবাসে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। এখন দরকার সম্মিলিত উদ্যোগ এবং আন্তরিক প্রচেষ্টা।