বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, বিগত সময়ে আমরা দেখেছি সব গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোকে ক্যাম্পাসে সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমরা চাই, সব ছাত্র সংগঠন মিলে ক্যাম্পাসগুলোতে সহাবস্থান নিশ্চিত করুক। সহাবস্থান নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসে শুদ্ধ ধারার নতুন সংস্কৃতি চালু হোক।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় একটি রেস্টুরেন্টে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় একথা বলেন তিনি।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, সহাবস্থান নিশ্চিত করা গেলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে শুদ্ধ ধারার নতুন সংস্কৃতি চালু হবে। তাতে জাতি, শিক্ষাঙ্গন উপকৃত হবে। ক্যাম্পাসগুলোতে সন্ত্রাসী, মাদক, নৈতিকতা বিবর্জিত চর্চার সুযোগ থেকে সুন্দর, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক ধারার কালচার শুরু হবে।তিনি বলেন, ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দৃশ্য স্পষ্ট, জাতিকে জিম্মি করে কীভাবে আওয়ামী লীগ, ফ্যাসিস্ট সরকার গণহত্যা চালিয়েছে। সমগ্র জাতির বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট শক্তির গণহত্যা পরিচালনার দলিল ও তথ্য প্রমাণও সুস্পষ্ট। একটি জাতিকে ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে আওয়ামী দুঃশাসনের যে ষড়যন্ত্র তা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট রেজিমের বিদায় হয়েছে। কিন্তু এখনো সেই ফ্যাসিস্ট রেজিমের নগ্ন হস্তক্ষেপ প্রকাশ পেতে দেখা যাচ্ছে। এখনো অনেকে ফ্যাসিস্ট রেজিমের পক্ষে কথা বলছেন। এসবের মাধ্যমে জাতিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
ইসলামী ছাত্রশিবির সামান্য জায়গায় কাজ করে না, ছাত্র রাজনীতির বিশাল জায়গায় ভূমিকা পালন করে থাকে উল্লেখ করে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদের জন্য কল্যাণকর কাজেই শুধু নয়, ছাত্রদের মানবসম্পদে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির। মেধা বিকাশে মেধা বৃত্তি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা, চিকিৎসা সহায়তা করে আসছে। ২০২৪ সালের আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেছাত্রদের ক্যারিয়ার গঠনে ছাত্রশিবির বড় ভূমিকা পালন করে থাকে উল্লেখ করে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদের দক্ষ, দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে তৈরির মধ্য দিয়ে দেশকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করার কাজ করছে শিবির। ছাত্রদের একাডেমিক শিক্ষা, শিক্ষা সংস্কার, আওয়ামী দুঃশাসনে সবচেয়ে বঞ্চিত ছিল শিক্ষা। শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার শিক্ষার অধিকার ও শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত কাজ করছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
বিগত সময়ে ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্র সংগঠনকে সহাবস্থান নিশ্চিতে কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি দাবি করে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন ধারার ছাত্র সংগঠনকে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি, বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা চাই শিক্ষার সঠিক সংস্কার হোক, বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গন শিক্ষার উপযোগী পরিবেশ গড়ে উঠুক, নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় অনুশাসন ও প্রত্যেক ধর্মীয় অনুভূতি সংরক্ষণে ছাত্রশিবির বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমরা চাই এই জায়গায় গণমাধ্যম বিশেষ পালন করুক।
ছাত্রদের চিন্তা-চেতনা অধিকার নিয়ে শিক্ষাঙ্গনে আসে তা যেন নিশ্চিত হয় তা চায় শিবির। শিক্ষাঙ্গনে লেজুড়বৃত্তিক কোনো কর্মসূচি পালিত না হোক। বরং শিক্ষার্থীদের সব অধিকারের পক্ষে যেন ছাত্র সংগঠনগুলো ভূমিকা রাখে সেই আহ্বান জানান তিনি।
বিগত সময়ে আমরা দেখেছি, ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রদের অধিকার বঞ্চিত করাই ছিল একটা সময়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর মূল কাজ। ছাত্র সংসদগুলোর কোনো কার্যক্রমের বালাই ছিল না। ইসলামী ছাত্রশিবির চায়, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্ররাজনীতি শুদ্ধ এবং সুষ্ঠু ধারার সৃষ্টি হোক। গেস্ট রুম গণরুম কালচার রেগিং থেকে শুরু করে নির্যাতনের ভয়াল যে চিত্রগুলো স্পষ্ট হয়েছে তা বন্ধ হোক। বিপরীতে ছাত্রশিবির কাজ করছে ছাত্রদের অধিকার নিয়ে।
এসময় ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট সদস্যদের মধ্যে দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম, প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান আযাদ, প্রচার সম্পাদক ডা. সাদেক আব্দুল্লাহ, এইচআরডি সম্পাদক আব্দুর রহিম, ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্কুল সম্পাদক সিদ্দিক আহমেদ, অর্থ সম্পাদক মিজবাহ উদ্দীন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আহমেদ তাওফিক, পরিকল্পনা সম্পাদক উসামা রাইয়ান, বিতর্ক সম্পাদক মিজবাহুল করিম, স্পোর্টস সম্পাদক আসাদুজ্জামানসহ ঢাকার বিভিন্ন শাখার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।ন তাদের পরিবার ও তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে।